বিশ্ববিশেষ সংবাদসংবাদ বিশ্লেষণ

ইরানের NPT-তে থাকার আর কোনো কারণ নেই: সংসদীয় নিরাপত্তা কমিশনের মুখপাত্র

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মিডিয়া মিহির ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিশনের মুখপাত্র ইব্রাহিম রেজায়ি পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন যে, কায়রো সমঝোতা কার্যত বাতিল হয়ে গেছে এবং ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-এ থাকার আর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের উচিত পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী গৃহীত সব সীমাবদ্ধতা সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়া।

সংবাদ সংস্থা তাসনিমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেজায়ি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি ইউরোপের তিন দেশের (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি) উদ্যোগে ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপকে “অবৈধ ও বেআইনি” বলে অভিহিত করেন এবং এর তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন,  “এই পদক্ষেপ আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাবে না। বরং এটি আমাদের আরও দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোত্তম জবাব হবে পারমাণবিক শিল্পকে আগের চেয়ে আরও এগিয়ে নেওয়া এবং বারজামের সব সীমাবদ্ধতা বাতিল করা।”

রেজায়ি আরও যোগ করেন,  “৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরাক রিঅ্যাক্টরের পুনঃনকশা এবং নতুন প্রজন্মের সেন্ট্রিফিউজ তৈরির কাজ দ্রুত শুরু করা জরুরি। ইরানের উচিত গৃহীত সব সীমাবদ্ধতা তুলে দিয়ে শক্ত হাতে পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া।”

তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  “পশ্চিমা দেশগুলো নিজেরাই আলোচনার পথ বন্ধ করেছে। ইরান আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (IAEA) সঙ্গে সহযোগিতার একটি কাঠামো তৈরি করেছিল, কিন্তু তারা দেখিয়েছে যে তারা সংলাপে আগ্রহী নয়। তাই ইরানের সঠিক জবাব হবে সব সীমাবদ্ধতা বাতিল করা এবং এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করা।”

জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের মুখপাত্র আরও বলেন, “পশ্চিমাদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে কায়রো সমঝোতা কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই IAEA-এর সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া বা NPT-তে থাকা এখন অর্থহীন। ইরানের উচিত NPT সম্পর্কিত নীতি পুনর্বিবেচনা করা।”

রেজায়ি দেশের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতির ওপরও গুরুত্ব আরোপ করে বলেন,  “নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল নতুন কোনো অর্থনৈতিক আঘাত আনবে না। বাজারে মুদ্রার অস্থিরতা মূলত মানসিক চাপের ফল। অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের এখনই পরিকল্পনা নিতে হবে যেন এই প্রভাব মোকাবিলা করা যায়।”

তিনি শেষ করে বলেন,  “বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা ও নিস্ক্রিয় করা। সরকারের পশ্চিমা দেশ বা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা করা উচিত নয়। বরং দেশের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানে মনোযোগী হতে হবে।”

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button