বেলায়েতে ফকীহ: ইসলামী প্রজাতন্ত্রে উলামার নেতৃত্বের জীবন্ত অভিজ্ঞতা
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মিডিয়া মিহির : ইসলামী বিপ্লব ও উলামার নেতৃত্ব: জীবন্ত অভিজ্ঞতা
ইরানের ইসলামী বিপ্লব চার দশকেরও বেশি সময় ধরে চলার পথে বাহ্যিক আক্রমণ, রাজনৈতিক চাপ এবং অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। তবু, এই বিপ্লব তার পথে স্থির থেকেছে, প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে এবং স্থায়িত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এই স্থিতিশীলতার মূল চাবিকাঠি হলো ধর্মীয় নেতৃত্ব ও উলামার কর্তৃত্ব (বেলায়েতে ফকীহ) এটি বিপ্লবের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করেছে, জাতীয় ঐক্য ও সামাজিক সংহতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রে উলামার কর্তৃত্ব কেবল একটি ফিকহী তত্ত্ব নয়; এটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈধতা ও কার্যকারিতার নিশ্চয়তা। ধর্মীয় নেতার প্রতি জনগণের আস্থা এমন একটি সম্পদ, যা জাতিকে অভূতপূর্ব চাপের মধ্যেও দৃঢ় রাখে। যখনই দেশ সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, উলামার নির্দেশনা এবং শান্তিপূর্ণ নেতৃত্ব বিপ্লবের পথে নেভিগেট করতে সহায়তা করেছে।
আজকের সমাজ পূর্বের চেয়ে দ্রুত সাংস্কৃতিক ও তথ্য-প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সম্মুখীন। নতুন প্রজন্ম নতুন প্রশ্ন, উদ্বেগ ও প্রত্যাশা নিয়ে এসেছে। তারা সরাসরি, যৌক্তিক এবং স্পষ্ট উত্তর আশা করে। যদি উলামার কর্তৃত্ব কেবল ঐতিহ্যগত ফর্ম্যাটে ব্যাখ্যা করা হয়, তবে এই প্রজন্মের একাংশ মনে করতে পারে যে তাদের প্রশ্নের উত্তর মেলে না।
এখানেই হাওযা-ইসলামিয়া বা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব প্রকাশ পায়। এই প্রতিষ্ঠানকে নতুন ভাষা ও উপায়ে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সংলাপ গড়ে তুলতে হবে এবং উলামার কর্তৃত্বের গুরুত্ব, বৈধতা ও কার্যকারিতা প্রমাণ, যুক্তি ও বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে হবে।
হাওযা-ইসলামিয়ার ভূমিকা কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়:
- বৈজ্ঞানিক পুনঃপাঠ: রাজনৈতিক ফিকহ বিষয়গুলোকে সহজ ও বোধগম্য ফর্ম্যাটে পুনর্বিবেচনা করা।
- মিডিয়ায় উপস্থিতি: মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে উলামার বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
- গঠনমূলক সংলাপ: প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি করা এবং শান্তিপূর্ণ, যথাযথ উত্তর প্রদান।
- সামাজিক উপস্থিতি: ছাত্রদের বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনগণের সঙ্গে উপস্থিত থেকে উলামার কার্যকারিতা প্রদর্শন।
ইসলামী বিপ্লব নতুন ইসলামী সভ্যতার পথে অগ্রসর এবং এই পথ বেলায়েতের ফকীহ কর্তৃত্ব ছাড়া বিভ্রান্তিমূলক হতে পারে।হাওযা -ইসলামিয়া তার বৈজ্ঞানিক ও আধ্যাত্মিক প্রেক্ষাপট ব্যবহার করে এই পথকে নিশ্চিত করতে পারে, যদি তারা চিন্তাশীল, সক্রিয় ও সময়োপযোগীভাবে সমাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকে।
বেলায়েতে ফকীহ কর্তৃত্ব ইসলামী বিপ্লবের মজবুত স্তম্ভ এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। চার দশকের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে, যখন সমাজ বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, তখন বেলায়েতে ফকীহ শান্তিপূর্ণ ও নির্দেশনামূলক নেতৃত্ব বিপ্লবের পথ সুগম করেছে। আজ হাওযা-ইসলামিয়ার দায়িত্ব আরও বড়—তাদের স্পষ্ট ভাষা ও সক্রিয় উপস্থিতি ব্যবহার করে নতুন প্রজন্মকে এই গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও নেতৃত্বের গুরুত্ব বোঝানো এবং সংরক্ষণ করা।