ইসলামিক জিহাদের সতর্কবার্তা: প্রতারণায় নয়, দখলদারদের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন তাদের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঘোষণা করেছে যে, প্রতিরোধের শপথ অটল এবং দখলদার শত্রুর কৌশল কিংবা প্রতারণা কখনোই ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামকে পরাজিত করতে পারবে না। গৌরবময় “তুফান আল-আকসা” যুদ্ধের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে প্রকাশিত এই ঘোষণায় তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—ফিলিস্তিনের স্বপ্ন মুছে ফেলা যাবে না, বরং রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে সেটি আরও দীপ্তিমান হবে।
মূল বক্তব্য
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত দুই বছরের নিরবচ্ছিন্ন গণহত্যা, গাজায় মানবজীবনের প্রতিটি অঙ্গনকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। একই সময়ে পশ্চিম তীরে হামলা, শরণশিবির ধ্বংস, বাস্তুচ্যুতির দুঃসহ মিছিল, কুদস নগরীর ইহুদিকরণ, এবং পবিত্র স্থানগুলো—আল-আকসা মসজিদ থেকে শুরু করে কিয়ামতের গির্জা পর্যন্ত—আক্রমণের শিকার হয়েছে। অবরোধ, দমন-পীড়ন ও অধিকার হরণ অব্যাহত থেকেছে প্রতিটি ফিলিস্তিনির জীবনে।
তবু ফিলিস্তিনের জনগণ অবিচল। তারা প্রমাণ করেছে—পৃথিবীর কোনো জাতিই এত কষ্ট সহ্য করেনি, তবু এমন অটল সংকল্প নিয়ে বেঁচে থাকেনি। ইসরায়েলি বর্বরতা ও আমেরিকার সহায়তা সত্ত্বেও তারা ঈমান, ধৈর্য ও সংগ্রামে অদম্য।
জিহাদ ইসলামি স্পষ্ট করেছে—প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি জনগণ আল্লাহর প্রতিশ্রুতির প্রতি তাদের আস্থা পুনরুজ্জীবিত করে, এবং ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়েও মর্যাদাপূর্ণ স্বাধীনতার জন্য আল্লাহর আশ্রয় নেয়।
আট দফা প্রতিজ্ঞা (প্রথম পাঁচটি)
১. জিহাদের শপথ — ইসলামিক জিহাদ দৃঢ়তার সঙ্গে জানাচ্ছে: আমরা জনগণ ও পবিত্র স্থান রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে আসে। এ লড়াই সমন্বিত হবে প্রতিটি প্রতিরোধী শক্তির সঙ্গে, বিশেষত আমাদের ভাই হামাসের সঙ্গে।
২. শত্রুর ছলনা ব্যর্থ হবে — জনগণ, আরব-ইসলামী উম্মাহ এবং মুক্তিকামী বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, আমরা অপরাধ ও আগ্রাসনের মোকাবিলা চালিয়ে যাব এবং শত্রুর রাজনৈতিক প্রতারণাকে ব্যর্থ করব।
৩. মানবিক মুক্তির দাবি — যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে দখলদারদের পূর্ণ প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা ত্বরান্বিতকরণ, অবরোধ ভাঙা, বন্দী বিনিময় এবং পুনর্গঠন—এসবই আমাদের ন্যায্য দাবির অংশ।
৪. বাস্তুচ্যুতি প্রতিহত — ফিলিস্তিনিরা তাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের মাধ্যমে গাজা থেকে জনগণকে বিতাড়নের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেছে। আগামীতে জাতীয় ঐক্য ও অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তই হবে আমাদের শক্তি।
৫. পশ্চিম তীর বিভাজনের বিরোধিতা — দখলদাররা পশ্চিম তীরকে ভাগ বা আত্মসাৎ করার যে প্রচেষ্টা করছে, আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের জনগণ প্রতিরোধের সব রূপ—প্রয়োজনে সশস্ত্র সংগ্রাম—অব্যাহত রাখবে, অধিকার রক্ষার জন্য।
বিবৃতির শেষাংশে ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন ঘোষণা করে—যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থ শত্রু কোনোদিনও কূটচাল দিয়ে বিজয় অর্জন করতে পারবে না। প্রতিরোধের শপথ চিরস্থায়ী, এবং ফিলিস্তিনের সংগ্রাম প্রতিটি নিপীড়িত জাতির জন্য আলোর মশাল হয়ে থাকবে।



