হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর কোম শহরে আগমন: শিয়া সংস্কৃতি ও ধর্মীয় জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন| প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মিডিয়া মিহির ইসলামের ইতিহাসের একজন বিশিষ্ট গবেষক বলেন:হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.আ.)-এর ২০১ হিজরি সালে কোম শহরে আগমন ছিল শিয়া ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মুহূর্ত। তাঁর পদার্পণ এই শহরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মর্যাদাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়, যা পরবর্তীতে কোমকে শিয়া জগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
দকায়েকি জানান, আব্বাসীয় খলিফা মা’মুন ইমাম রেজা (আ.)-কে মদিনা থেকে মেরভে ডেকে নিলে শিয়া ও আহলে বাইতের পরিবারগুলো চাপে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে ইমাম রেজা (আ.)-এর বোন হযরত মাসুমা (সা.আ.) ভ্রাতার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে মদিনা থেকে যাত্রা শুরু করেন। তবে দীর্ঘ ভ্রমণের পর সাওয়েহ শহরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি আর এগোতে পারেননি। এ সময় কোম এর শিয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁকে শহরে আমন্ত্রণ জানান।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, কোম এর প্রভাবশালী আশআরীয় পরিবার হযরত মাসুমা (সা.আ.)-কে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় এবং মূসা ইবনে খুযরাজ তাঁর জন্য নিজ গৃহে থাকার ব্যবস্থা করেন। যদিও তাঁর কোম এ অবস্থান মাত্র ১৭ দিন স্থায়ী হয়েছিল এবং তিনি সেখানে ইন্তেকাল করেন, তবুও এই স্বল্প সময়ের উপস্থিতি কোম এর ইতিহাসে গভীর পরিবর্তন আনে।
দকায়েকির মতে, হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর মাজার কোম কে দ্রুত শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ জায়ারতগাহে রূপান্তরিত করে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাঁর হারামের চারপাশে হাদিস, তাফসির ও ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র গড়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে কোম বিশ্ব ইসলামে শিয়া জ্ঞানের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
তিনি আরও বলেন, হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর কোম আগমন আহলে বাইত (আ.) ও ইরানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে, যা ইরানিদের ধর্মীয় পরিচয়কে দৃঢ় করে তোলে এবং কোম কে শিয়া সমাজের বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক আন্দোলনের জন্মভূমিতে পরিণত করে।
দকায়েকি শেষ পর্যন্ত উল্লেখ করেন, হিজরি ২০১ সালে হযরত মাসুমা (সা.)-এর কোম আগমন শিয়া সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে নতুন এক যুগের সূচনা করে, যার প্রভাব আজও কোম এর বৈশ্বিক ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক মর্যাদায় প্রতিফলিত হচ্ছে।