
শিশুদের সঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) কেমন আচরণ করতেন?
একদিন কয়েকজন শিশু মদিনার গলিতে খেলা করছিল। হঠাৎ তারা শুনতে পেল—কেউ একজন তাদেরকে সালাম দিয়েছে। চোখ তুলে তাকাতেই দেখতে পেল, তাদের সামনে স্বয়ং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)! শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। তারা বলে উঠল, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনাকে অনেক ভালোবাসি! আপনি তো সবসময় শিশুদের সাথে খেলা করেন, আজকে কি আমাদের সাথে একটু খেলা করবেন?”
নবীজি (সা.) তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন। আসলে তিনি তখন মসজিদে নামাজের জন্য যাচ্ছিলেন, সাহাবারা মসজিদে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল। তবুও তিনি চাননি বাচ্চারা মন খারাপ করুক। তাই তিনি তাদের সাথে খেলায় ব্যস্ত হলেন।
এদিকে, মসজিদে সাহাবারা চিন্তিত হয়ে পড়লেন— “রাসূলুল্লাহ (সা.) তো নিয়মিত সময় মতো আসেন, আজ কী হয়েছে?” তখন হযরত বিলাল (রা.)-কে খোঁজ করতে পাঠানো হলো। বিলাল (রা.) রাস্তায় বেরিয়ে অবাক! কী দেখলেন? নবীজি (সা.) ছোট্ট শিশুদের সাথে খেলা করছেন।
বেলাল (রা.) মনে করলেন—বাচ্চাদের সরিয়ে আনতে হবে, হয়তো তারা নবীজিকে বিরক্ত করছে। কিন্তু নবী করিম (সা.) বিলালকে থামিয়ে দিলেন এবং বললেন—
“বেলাল! বাচ্চাদের কিছু বলো না। বরং বাড়ি গিয়ে ওদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে এসো।”
বেলাল (রা.) খাবার নিয়ে এলেন, নবী করিম (সা.) সেগুলো ভাগ করে বাচ্চাদের দিলেন। বাচ্চারা খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এরপর নবী করিম (সা.) বেলাল (রা.)-কে সাথে নিয়ে মসজিদে রওনা হলেন।
এ ঘটনা থেকে আমরা কী শিক্ষা নিতে পারি?
শিশু হোক আমাদের নিজের বা অন্য কারো—তাদের প্রতি সবসময় দয়ালু ও স্নেহশীল হতে হবে।
কোনোভাবেই তাদের মনে আঘাত দেওয়া যাবে না।
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা অনেক সময় দেখি— মসজিদে জামাত শুরু হলে, কোনো শিশু যদি একটু দৌড়ায় বা শিশু-সুলভ আচরণ করে, অনেকেই রেগে যান… কেউ কেউ আবার তাদেরকে পিছনে ঠেলে দেন… এমনকি অনেক সময় শিশুর সামনেই তার বাবা-মাকে অপমান করেন – যা ইসলামী আদর্শের সম্পূর্ণ বিপরীত: তাই আমাদের উচিত—নবী করিম (সা.)-এর আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং শিশুদের সাথে নরমভাবে কথা বলা, ধৈর্য ধরা, আর ভালোবাসা দিয়ে তাদের হৃদয় জয় করা।
অনুবাদ
মুহাম্মাদ রুস্তম আলী