স্বাস্থ্য পরামর্শজীবনযাপনবিশেষ সংবাদ

মায়ের মেজাজের প্রভাব ও প্রাকৃতিকভাবে দুধ বৃদ্ধির কৌশল

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্যবাহী ও সম্পূরক চিকিৎসা দপ্তরের উন্নয়ন বিষয়ক সহকারী, মায়ের খাদ্যাভ্যাস ও মেজাজের ভূমিকার প্রতি ইঙ্গিত করে স্তন্যদানের পরিমাণ ও মানের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে বলেছেন এবং স্তন্যদানকালে সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ব্যবহারিক উপায় তুলে ধরেছেন।

মিডিয়া মিহির : সামাজিক সংবাদ বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্যবাহী ও সম্পূরক চিকিৎসা দপ্তরের উন্নয়ন বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক সাইয়্যেদ মাহদি মীরগজনফারি বলেছেন: মায়ের দুধ শিশুর জন্য পুষ্টিকর নিঃসরণ হলেও, কিছু মায়ের ক্ষেত্রে স্তন্যদানকালে দুধ কমে যেতে পারে। ইরানি চিকিৎসা এ ব্যাপারে কার্যকর সমাধান প্রদান করে।

তিনি যোগ করেন: যেসব মায়ের শুষ্ক মেজাজ (ড্রাই টেম্পারামেন্ট) থাকে, তাদের সাধারণত দুধ কমে যায় বা শুকিয়ে যায়। এর কারণ তাদের দেহের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য।

এই ইরানি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের মতে, গরম ও শুষ্ক বা ঠান্ডা ও শুষ্ক মেজাজের মায়েদের সাধারণত দুধ কম হয়। যেমন শুষ্ক মেজাজের মানুষের ত্বক, নখ ও চুল শুষ্ক হয়—এই শুষ্কতা দুধ নিঃসরণও কমিয়ে দেয়।

মীরগজনফারি স্মরণ করিয়ে দেন:  ইরানি চিকিৎসা অনুযায়ী শুষ্ক মেজাজের মায়েদের জন্য প্রধান পরামর্শ হলো—রসালো ও আর্দ্রতা সৃষ্টিকারী খাবার খাওয়া, যেমন: লেটুস, দুগ্ধজাত খাবার, দুধ, এবং তরলজাতীয় খাবার যেমন খিচুড়ি, স্যুপ ইত্যাদি। অন্যদিকে, ঠান্ডা ও ভেজা মেজাজের মায়েদের দুধ অনেক সময় পাতলা হয় এবং ঘনত্ব থাকে না।

এই গবেষক আরও বলেন:
এই ধরনের মায়েদের জন্য দই, লাচ্ছি, সালাদ প্রভৃতি ঠান্ডা ও আর্দ্র খাবার কম খাওয়া উচিত। পরিবর্তে কম পরিমাণে কিন্তু বেশি শক্তিদায়ক খাবার যেমন কাবাব, ঝোলযুক্ত মাংস (আবগোশত), বাদাম পায়েস খাওয়া উচিত। এছাড়া প্রতিদিন ব্যায়াম করা, গরম পানির বাথ বা শুকনো সাউনা ব্যবহার করে ঘাম ঝরানো শরীরের অতিরিক্ত আর্দ্রতা কমাতে সাহায্য করে এবং দুধকে ঘন করে।

তিনি বলেন: দুধের ঘনত্ব যাচাই করতে এক ফোঁটা দুধ নখে ফেলা যায়। যদি সহজে গড়িয়ে যায় তবে দুধ বেশি পাতলা, যদি একেবারেই নড়ে না তবে অতিরিক্ত ঘন—যা শিশুর হজমে অসুবিধা করে। অল্প নড়াচড়া করলে সেটি স্বাভাবিক ঘনত্বের দুধ। এছাড়া, গ্লাসে ঢাললে দুধের উপাদানগুলো আলাদা হওয়া উচিত নয়।

মীরগজনফারি আরও বলেন: মায়ের খাবারের সঙ্গে সরাসরি দুধের স্বাদের সম্পর্ক রয়েছে। যেমন শাকপাতা, পেঁয়াজপাতা, পেঁয়াজ, রসুন, আচার, শসার আচার খেলে দুধের স্বাদ পরিবর্তিত হয়। তাই মায়েদের তাদের খাবারের প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

এই ফিজিওলজি বিশেষজ্ঞ বলেন: শিশুদের মেজাজ স্বাভাবিকভাবেই গরম। তাই স্তন্যদানের পরিবেশ ঠান্ডা ও আরামদায়ক হওয়া উচিত। গরম মৌসুমে শিশুকে অতিরিক্ত কাপড় পরানো উচিত নয়। শিশুকে মায়ের শরীরের অতিরিক্ত সংস্পর্শে রাখাও উচিত নয়—এতে তার শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে এবং ক্ষুধা কমে যায়। শিশুকে স্তন্যদানের আগে গোসল করালে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে।

আর্মি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন: মায়ের গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত সমস্যা যেমন গ্যাস হলে দুধের আর্দ্রতা বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের মায়েদের দুগ্ধজাত খাবার, সালাদ ও তরমুজ কম খাওয়া উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ ও ব্যায়াম জরুরি। এছাড়া, শিশুর পেটের উপরের অংশে ক্যামোমাইল তেল দিয়ে মালিশ করলে গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স কমে।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button