বিশ্বধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদ

মুসলিমদের ঐক্যই ইসরাইলি বর্বরতা রোধের একমাত্র পথ: পেজেশকিয়ান

মিডিয়া মিহির: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, মুসলিমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং বিভেদ এড়িয়ে চলে, তাহলে জায়নিস্টরা কখনো গাজা কিংবা অঞ্চলের অন্য কোথাও এ ধরনের নৃশংসতা চালাতে পারবে না।

সোমবার তহরানে অনুষ্ঠিত মিলাদুন্নবী (সা.) ও ৩৯তম আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, মুসলিমদের নিজেদের অধিকার রক্ষা এবং বর্বরতা ঠেকাতে “এক হাত” হয়ে কাজ করতে হবে।

ঐক্যের গুরুত্ব

পেজেশকিয়ান বলেন, “যদি আমরা সত্যিই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসারী হই, তবে আমাদের ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে জায়নিস্ট শাসনকে বাধা দিতে হবে, যাতে তারা প্রকাশ্যে মুসলমানদের রক্ত ঝরাতে না পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসলামের নবী (সা.) গোত্র ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সংহতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। আজ মুসলমানদের উচিত সেই উত্তরাধিকার রক্ষা করা।

অভ্যন্তরীণ বিভেদই মূল সমস্যা

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, সমস্যার মূল শত্রু শুধু ইসরাইল বা যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং মুসলমানদের ভেতরকার বিভেদ। “যদি ইসলামী সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকত, তবে কোনো শক্তিই মুসলমানদের অধিকার লঙ্ঘনের সাহস পেত না। বিজয়ের একমাত্র পথ হলো ঐক্য।

পশ্চিমাদের দ্বিচারিতা

পেজেশকিয়ান পশ্চিমা দেশগুলোর ভণ্ডামির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “তারা ইসলামী সমাজের সামান্য পদক্ষেপকেও মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে। অথচ নিজেরা নারী, শিশু ও বৃদ্ধদেরও রেহাই দেয় না; গণহত্যা চালায়। তারা মানবাধিকারের কিছুই বোঝে না। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিভেদই তাদের সুযোগ দেয় অস্ত্র বিক্রি করতে ও মুসলিম দেশগুলিকে লুটতে।”

ভ্রাতৃত্বের অঙ্গীকার

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান কোনো মুসলিম দেশের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাবে না। “আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে ইসলামী উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করব। আমরা ইরাকি, ফিলিস্তিনি, মিসরীয় এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের ভ্রাতৃত্বের অংশীদার।”

ঐক্যের শক্তি

পেজেশকিয়ান ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের যৌথ ১২ দিনের যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তাদের লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছিল ইরানের ঐক্য ও প্রতিরোধের কারণে। “আমাদের মিসাইল ছিল, সাহসী যোদ্ধারা ছিল যারা শত্রুকে কঠিন আঘাত করেছিল। কিন্তু সবচেয়ে শক্ত আঘাত এসেছিল ইসলামী সমাজের ঐক্য থেকে, যা শত্রুকে হতাশ করেছিল।”

আলেমদের দায়িত্ব

ইরানি প্রেসিডেন্ট মুসলিম দেশগুলোকে ইসরাইলি অপরাধের নিন্দা জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে তিনি আরও ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইসলামী উম্মাহর মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা আমাদের সবার, বিশেষত আলেমদের ওপর এক গুরুদায়িত্ব।”

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button