মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ কি পতনের বেলাভূমিতে ঠেকলো?
সংবাদ পর্যালোচনা প্রতিবেদন-
সম্প্রতি বিশ্বে একটি সংবাদ ব্যাপকভাবে আলোড়িত হচ্ছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান আমাকে হত্যা করলে আমি এমন ডিক্রীতে সই করে যাবো যাতে ইরানকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়া হয়। বিশ্ব মিডিয়া তথা সিএনএন, আল-জাজিরা, আরব নিউজ, সিনহুয়াসহ অন্য সকল মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে এই সংবাদ।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ব্ক্তব্য আমেরিকার ইতিহাসে একেবারে বিরল ঘটনা। আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট কখনো এই ধরনের আশঙ্কা করেন নাই যে তাকে অন্য কোন দেশ হত্যা করে ফেলবে! এর দ্বারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দর্প সগৌরবে ছেদ পরেছে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের হত্যা আশঙ্কা প্রকাশ করায় মার্কিন সামরিক ও কুটনৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের বিপর্য্যস্ত কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। এক সময় বলা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য্য অস্তমিত হয় না। তখন ব্রিটেন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মানব সভ্যতার সাথে কি অসভ্য আচরণ করেছে তা পৃথিবীর অত্যাচরিত ও নিপীড়িত মানুষের ইতিহাসের পাতা উল্টালেই প্রাণ শিউরে উঠে। উদাহরণ স্বরূপ রেড ইন্ডিয়ানদের ইতিহাস, আফ্রিকার কালো চামড়ার মানুষের ইতিহাস ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠির ইতিহাস তা আজো পাথরে খোদাই করার মত স্থায়ী হয়ে আছে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ আজ কোথায়? যদিও মানবতার সবক দেয়ার জন্য ভদ্রবেশি তসকর এখন বসে বসে অনাহার ক্লিষ্ট মানুষের সঞ্চিত গোস্ত চিবাচ্ছে।
বহুপূর্বেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সূর্য্য অস্তমিত হয়েছে। রোমানদের উত্তরসুরী হলেও আজ তাদের সৌর্য্যবীর্য্য নেই। কিন্তু ব্রিটিশের সেই সাম্রাজ্যবাদী নীতির পুরোটাই দখল করেছে গত কয়েক দশকের সুপার পাওয়ার আগ্রাসী আমেরিকা। বিশ্বের বিভিন্ন জাতি-গোষ্টির সাথে যুদ্ধ লাগিয়ে তাদের দুর্বল করে শোষণের এক মহাউৎসবে মেতে উঠেছে। একারণে তারা বিশ্বের কোন দেশ ও জাতিকে তোয়াক্কাই করতো না। কিন্তু তারা প্রকৃতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নাই।
ইতিহাসের গ্রেটবিটেন এখন আর গ্রেট নেই। গ্রেট হারিয়ে সে তার ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী নীতি বর্তমানের সুপার পাওয়ার আমেরিকার উপর অর্পণ করে নখ ও দাঁতহীন বাঘ হয়ে অবসর জীবনযাপন করছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ গ্রেটব্রিটেনের উত্তরসুরী হয়ে বহুকাল যাবত পৃথিবীর দূর্বল ও অসহায় জাতি সমূহের উপর ছড়ি চালিয়ে যাচ্ছে।
সকলের মনে রাখা উচিৎ যে, প্রতিটি আঘাতের প্রতিঘাত রয়েছে। প্রতিটি জুলুমের শেষ পরিণতি রয়েছে। সেই পরিণতিটি হলো প্রতিরোধ। এবার পৃথিবীর নির্যাতিত জাতিসমূহ একথা অনুধাবন করছে যে, প্রতিরোধ ছাড়া মুক্তি পাওয়ার পথ নেই।
তাই এবার যখন প্রতিরোধ শুরু হয়েছে, এই প্রতিরোধ আল্লাহর সাহায্যেই হচ্ছে। কি সেই সাহায্য? তা’হলো আলী (আঃ)-এর বেলায়েত ঘোষণায় শয়তান যেমন আর্তচিৎকার দিয়েছে; সবাই তা শুনতেও পেয়েছে। কিন্তু সবাই তা বুঝতে পারেনি। ঠিক তদ্রুপ শেষ ইমামের প্রতিনিধি অলিয়ে আমরে মুসলেমিনে জাহানের (আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী হাফি.) মাধ্যমে প্রতিরোধের ডাকে ভয়ে ভীত হয়ে বিশ্ব শয়তানের যে আর্তচিৎকারের আওয়াজ, এটাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্ঠে উচ্চারিত হয়েছে।
আজ শয়তান নিরাশ হয়েছে তাই তার আর্তচিৎকার “আমাকে খুন করা হলে আমি ইরানকে ধ্বংস করে দেবো”। এখন শয়তান তার নিজের কন্ঠনালী নিজেই চেপে ধরেছে এখন সে আত্মহত্যা করবে। হয়তো এটা সবাই দেখতে পাবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষক,
ক্বারী মীর রেজা হোসাইন