জীবনযাপনধর্ম ও বিশ্বাসবিশ্বহাদিস

পরিবারের পাশে বসা—ইবাদতের এক অনন্য রূপ

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ইবাদত মানে কেবল মসজিদে বসে নামাজ পড়া বা রোজা রাখাই নয়। ইসলাম সেই প্রতিটি কাজকেও ইবাদতের মর্যাদা দিয়েছে, যা ভালোবাসা, দয়া ও দায়িত্ববোধ থেকে উদ্ভূত। নবী করিম ﷺ-এর দৃষ্টিতে পারিবারিক সময় কাটানোও ইবাদতের সমান মর্যাদাসম্পন্ন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোও সেই শ্রেষ্ঠ ইবাদতের একটি।

হাদীস:

قَالَ النَّبِيُّ ﷺ:
جُلوسُ المَرءِ عِندَ عِيالِهِ أحَبُّ إِلَى اللهِ تَعالى مِنِ اعتِكافٍ في مَسجِدي هذا

অর্থ: একজন ব্যক্তির পরিবারের পাশে বসে থাকা আল্লাহ তায়ালার কাছে আমার এই মসজিদে ইতিকাফে বসার চেয়েও বেশি প্রিয়।

সূত্র: মীযানুল হিকমাহ, খণ্ড , পৃষ্ঠা ২৮৭

 ব্যাখ্যা:

এই হাদীস ইসলামের এক গভীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে।
নবী করিম ﷺ বোঝাতে চেয়েছেন—পরিবারের পাশে বসে কথা বলা, হাসি-আনন্দ ভাগ করে নেওয়া, সন্তানদের সময় দেওয়া—এসবও আল্লাহর কাছে ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। কারণ, ইসলামের লক্ষ্য কেবল আধ্যাত্মিক উন্নয়ন নয়; বরং পারিবারিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাও এতে অন্তর্ভুক্ত। একটি শান্তিপূর্ণ পরিবারই একটি নৈতিক ও দৃঢ় সমাজের ভিত্তি।

ফলাফল শিক্ষা:

১.পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন প্রদর্শন আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায়।

২.স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানদের পাশে সময় দেওয়া ইবাদতের মর্যাদা রাখে।

৩.পরিবারের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সমাজে নৈতিক স্থিতি আনে।

৪.ইসলাম মানবজীবনের প্রতিটি সম্পর্ক ও অনুভূতিকে ইবাদতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।

৫.মসজিদে ইতিকাফের মতো বড় আমলের চেয়েও পরিবারকে গুরুত্ব দেওয়া—ইসলামের মানবিক ভারসাম্যের প্রতীক।

উপসংহার:

পরিবারের পাশে বসে ভালোবাসা বিলানো, তাদের খোঁজ নেওয়া ও হাসি ভাগ করা—এসব ছোট কাজই আল্লাহর দরবারে বড় আমল হয়ে ওঠে। ইসলাম শেখায়, যে ঘরে ভালোবাসা আছে, সে ঘরই মুমিনের জান্নাতের পূর্বভাগ।

আরও পড়ুন 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button