ইতিহাসধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদবিশ্বসংবাদ বিশ্লেষণ

তুফানুল আকসা অভিযান: আমেরিকা ও ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করে দিয়েছে: আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ৭ অক্টোবর, ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ি পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকা ও ইসরায়েলের আধিপত্য বিস্তারের ব্যর্থ পরিকল্পনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন— “তুফানুল আকসা অভিযান শত্রুর সব হিসাব-নিকাশ ভেঙে দিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হিংস্র হামলাগুলো আসলে তাদের এই বড় পরাজয়েরই স্নায়বিক প্রতিক্রিয়া।”
সর্বোচ্চ নেতা গত এক বছরে তুফানুল আকসা অভিযান নিয়ে একাধিকবার মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন— “এই অভিযান আমেরিকা ও জায়নিস্টদের সেই সুপরিকল্পিত মহাযোজনাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা পশ্চিম এশিয়া এবং সমগ্র ইসলামী বিশ্বের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন— “গাজার নিরস্ত্র জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর হামলা আসলে সেই ব্যর্থ পরিকল্পনার প্রতি তাদের এক মানসিক প্রতিক্রিয়া।”
ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর মাজার শরীফে সর্বোচ্চ নেতার ঐতিহাসিক বক্তব্য
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি গত বছর ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর পবিত্র মাজারে প্রদত্ত ভাষণে বলেন— “আমেরিকা, জায়নিস্ট উপাদান, তাদের আঞ্চলিক অনুসারী এবং কিছু সহযোগী রাষ্ট্র একটি বিস্তৃত ও গভীর ষড়যন্ত্র তৈরি করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল— পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কগুলো এমনভাবে পুনর্গঠন করা, যাতে ইসরায়েল নিজের ইচ্ছেমতো অঞ্চলটির রাজনীতি ও অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।”
তিনি বলেন— “এই পরিকল্পনার পেছনে আমেরিকা ছিল মূল চালিকাশক্তি; ইংল্যান্ড ও আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট নেটওয়ার্কও সক্রিয়ভাবে তাদের সহযোগিতা করছিল। এমনকি কিছু আঞ্চলিক সরকারও পুরো উদ্যমে এতে অংশ নিয়েছিল। ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়নের একদম শেষ পর্যায়ে ছিল— এমন এক সংকটময় মুহূর্তেই তুফানুল আকসা অভিযান শুরু হয় এবং শত্রুর বহু বছরের শ্রমে গড়া সব পরিকল্পনাকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়।”
 তুফানুল আকসা অভিযান: শত্রুর স্বপ্নভঙ্গের প্রতীক
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা গত বছর ‘তুফানুল আকসা’র প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বক্তৃতায় বলেন, “১৫ মেহর (৭ অক্টোবর)–এর এই ঐতিহাসিক অভিযান এমন এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করেছে, যা বহু বছর ধরে নিখুঁতভাবে সাজানো হয়েছিল। গত আট মাসের বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, তারা আর এই পরিকল্পনাকে পুনরুজ্জীবিত করার সামান্য আশাও খুঁজে পাচ্ছে না।”
সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, “আজ ইসরায়েল গাজার মানুষের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে, তা তাদের সেই ভঙ্গুর পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া মাত্র। আমেরিকা যেভাবে প্রকাশ্যে এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করছে, সেটিও সেই পরাজয়ের প্রতিফলন— কারণ তারা যেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাটি তৈরিতে এত পরিশ্রম করেছিল, তুফানুল আকসা মুহূর্তেই সেটিকে ভণ্ডুল করে দিয়েছে। এটি সত্যিই ছিল এক ঐতিহাসিক ও অলৌকিক ঘটনা।”
[ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্য, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ও অন্যান্য বক্তব্যের অংশ বিশেষ]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button