ধর্ম ও বিশ্বাসকুরআনকুরআন শিক্ষাবিশেষ সংবাদ

হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর সাথে সংযোগ বেলায়েতের পথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যম

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর সাথে সংযোগ বেলায়েতের পথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যম:  হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ হোসেইন মুমেনি

মিডিয়া মিহির: ইরানের ধর্মীয় নগরীতে অবস্থিত হযরত ফাতিমা মাসুমা ((সা.আ.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকে আয়োজিত এক আধ্যাত্মিক আসরে বক্তা হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ হোসেইন মুমেনি বলেন, “এই মহীয়সী নারীর সাথে সম্পর্ক ও আশ্রয় নেওয়া শিয়া সম্প্রদায়কে বেলায়েতের পথ এবং ইসলামী শিক্ষার মূল উৎসের সাথে যুক্ত করে।”

 আধ্যাত্মিক বার্তা ও শিক্ষা

তিনি বলেন, আল্লাহর কাছ থেকে মর্যাদা ও মহান স্থান লাভ কখনো বিনা কারণ হয় না; এটি সবসময় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার ফলাফল। মানুষ যখন ঈমানের পরীক্ষায় সফল হয়, তখনই সে আল্লাহ ও আহলে বায়তের (আ.) প্রশংসার যোগ্য হয়।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ হোসেইন মুমেনি

হুজ্জাতুল ইসলাম মুমেনি উল্লেখ করেন যে ইসলামের লক্ষ্য হলো “আবুদিয়্যাত” (সত্যিকার বান্দা হওয়া) অর্জন করা।

তিনি বলেন, “প্রতিটি নামাজে আমরা নবী মুহাম্মদ (সা)-এর আবুদিয়্যাতের সাক্ষ্য দিই। এর মানে, প্রকৃত বান্দা হওয়া– বিনয়ী থাকা, ফরজ আদায় করা ও হারাম থেকে বাঁচা– মানুষের সর্বোচ্চ মর্যাদা।”

তিনি ইমাম আলীর (আ.) নৈতিক উপদেশ উদ্ধৃত করে বলেন,

  • অহংকার ও গর্ব আবুদিয়্যাতের পরিপন্থী।
  • প্রকৃত আবুদিয়্যাত প্রকাশ পায় বিনয়ী আচরণে, দায়িত্ব পালন ও পাপ থেকে বিরত থাকার মধ্যে।

আবুদিয়্যাত অর্জনের সূত্র

মুমেনি ব্যাখ্যা করেন যে, প্রকৃত বান্দা হতে হলে –

১. আল্লাহকে সঠিকভাবে জানতে হবে,

২. যে সব কারণ মানুষকে আল্লাহ থেকে দূরে করে তা জানতে হবে ও এড়িয়ে চলতে হবে,

৩. এবং যে সব কারণ মানুষকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে তা জানতে ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এভাবে, যখন মুমিন ফরজ পালন করে ও হারাম থেকে দূরে থাকে, তার অন্তরে মারেফাত (আল্লাহর জ্ঞান) এর আলো স্থাপন হয় এবং তার হৃদয় থেকে হিকমত ও সত্য ভাষণ প্রবাহিত হয়।

হযরত মাসুমা (সা)-এর মাহাত্ম্য

 তিনি আরও বলেন, হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর জিয়ারত ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আহলে বায়তের (আ.) হাদিস অনুযায়ী, “যে ব্যক্তি মারেফাত সহকারে এই মহীয়সী নারীর জিয়ারত করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায় এবং তিনি সর্বজনীন শাফায়াত প্রদান করবেন।”

কোম শহরের মাকাম ও মর্যাদা

মুমেনি শহর কেমের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,

  • এখানে আলেম ও মুহাদ্দিসদের উপস্থিতি শহরটিকে বরকতময় করেছে।
  • বহু হাদিসে উল্লেখ আছে যে কোমের মাটি পবিত্র এবং আলেমদের উপস্থিতি এখানকার মানুষদের জন্য বিপদ ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা নিয়ে আসে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোম শহরটি শিয়া জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু। হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর আগমন ছিল এক ঐতিহাসিক মোড়, যা হাওজা ইলমিয়ার প্রতিষ্ঠা ও আহলে বায়তের জ্ঞান বিস্তারের সূচনা করে। বক্তব্যের শেষে হুজ্জাতুল ইসলাম মুমেনি বলেন, “যে কেউ হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তার প্রতি আশ্রয় নেয়, সে সরাসরি বেলায়েতের শৃঙ্খলের সাথে যুক্ত হয় এবং ইসলামের মূল উৎস থেকে প্রেরণা পায়।”

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button