বিশ্বধর্ম ও বিশ্বাস

ব্যাংকে জমাকৃত টাকার লাভের উপর খুমস গণনা করার নিয়ম কী?

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ২ নভেম্বর ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ব্যাংক আমানতের মুনাফায় ‘খুমস’ আদায়ের বিধান:আয়াতুল্লাহ আল উজমা সায়্যিদ আলি খামেনেয়ি (হা.জা.)–এর ফতোয়া অনুযায়ী, যদি কারও বার্ষিক আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় হিসেবে থেকে যায়, তবে তার ওপর খুমস (ধর্মীয় কর) প্রদান করা আবশ্যক। আর যদি সেই অর্থ কোনো জমি বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত হয় এবং জমিটি নিজেই খুমসযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলে বিক্রয়লব্ধ অর্থও খুমসের আওতায় পড়বে। একইভাবে, ব্যাংক আমানতের লাভ (সুদ) যদি বছরের শেষে খরচ না করা হয় এবং সঞ্চিত থাকে, তবে তার ওপরও খুমস আদায় ফরজ হবে।

 ফিকহি প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: আমি পঁচিশ মিলিয়ন তুমান (২৫,০০০,০০০) টাকার একটি মূলধন সংগ্রহ করেছি — এক অংশ জমি বিক্রি থেকে, আর এক অংশ ব্যয়ের সাশ্রয় করে।
আমি এই অর্থ ইসলামী চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকে আমানত রেখেছি, যাতে এর লাভ দিয়ে জীবিকার ব্যয় মেটাতে পারি, কারণ বর্তমানে আমার কোনো উপযুক্ত চাকরি নেই। আমি জানতে চাই— মূলধন ও এর লাভ— উভয়ের ওপর কি খুমস আদায় করতে হবে? আমি আয়াতুল্লাহ আল উজমা খামেনেয়ির অনুসারী।

উত্তর: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মুহসিন ফাল্লাহজাদে, মর্যাদাপূর্ণ নেতার প্রতিনিধি হিসেবে, নিম্নলিখিতভাবে উত্তর দিয়েছেন— আয়াতুল্লাহ আল উজমা খামেনেয়ির মতামত অনুযায়ী, মূলধনের বিষয়ে দুই ভাগে পার্থক্য করতে হবে:

১. বার্ষিক আয়ের সঞ্চয় থেকে সংগৃহীত অর্থ: যদি সেই অর্থ আপনার বার্ষিক আয়ের অংশ হয়— যেমন বেতন বা অন্যান্য আয়ের বাকি অংশ—
তবে সেটি খুমসযোগ্য, এবং তার এক-পঞ্চমাংশ খুমস হিসেবে আদায় করতে হবে।

২.জমি বিক্রির অর্থ: এখানে প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে— জমিটি যখন আপনার মালিকানায় ছিল, তখন কি সেটি খুমসের আওতায় ছিল?
যদি জমিটি এমন সম্পদ হয় যার ওপর খুমস প্রযোজ্য ছিল,
তবে সেই জমি বিক্রির অর্থও খুমসযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে।

এই বিষয়ে বিস্তারিত যাচাইয়ের জন্য নিজ নিজ মারজায়ে তাকলিদ (ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের দপ্তর)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করাই উত্তম, যাতে নির্দিষ্ট অবস্থাটি পরিষ্কারভাবে পর্যালোচনা করা যায়।

 আমানতের মুনাফা সম্পর্কে নির্দেশনা:

ব্যাংকে জমাকৃত টাকার লাভ (সুদ) ঐ বছরের আয়ের অংশ হিসেবে গণ্য হবে।
অতএব— যদি বছরের শেষ হওয়ার আগেই এই লাভ জীবিকার প্রয়োজনীয় ব্যয়ে ব্যবহার করা হয়, তবে তার ওপর খুমস ফরজ হবে না। কিন্তু যদি তা বছরের শেষে অব্যবহৃত থেকে যায় এবং সঞ্চয় হিসেবে থাকে, তবে সেই অংশের ওপর খুমস আদায় আবশ্যক হবে।

খুমস কেবল একটি আর্থিক বিধান নয়— এটি সম্পদের পবিত্রতার প্রতীক।
যে ব্যক্তি তার আয়কে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী বিশুদ্ধ রাখে,
তার সম্পদে বরকত ও জীবনে প্রশান্তি নেমে আসে।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button