বিশ্বসংবাদ বিশ্লেষণ

স্ন্যাপব্যাক সক্রিয়করণের পর তুরস্কের পদক্ষেপে ইরানের কড়া প্রতিক্রিয়া

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ৬ অক্টোবর, ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বাতিল হয়ে যাওয়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তুরস্কের জারি করা কার্যকর নোটিশকে অপ্রয়োজনীয়, অবৈধ ও আইনি ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি সোমবার তেহরানে সাংবাদিকদের বলেন, তুরস্কের এই পদক্ষেপের কোনো বৈধ আইনি ভিত্তি নেই, কারণ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো বহু আগে বাতিল হয়েছে এবং আর কার্যকর নয়।

ইউরোপীয় তিন দেশের পদক্ষেপের কোনো আইনি বৈধতা নেই”

বাকায়ি বলেন, সম্প্রতি ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য কর্তৃক ঘোষিত স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী

তিনি সব দেশকে, বিশেষত ইরানের প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোকে, আহ্বান জানালেন যেন তারা এমন কোনো উদ্যোগে অংশ না নেয় যা ওই তিন ইউরোপীয় দেশের অবৈধ ও একতরফা পদক্ষেপকে বৈধতা দিতে পারে

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি

 “তুরস্কে ইরানের কোনো সম্পদ জব্দ হয়নি”

ইরানের মুখপাত্র স্পষ্ট করে জানান, তুরস্কের জারি করা নোটিশে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের তুরস্কে কোনো সম্পদ, ব্যাংক হিসাব বা অর্থনৈতিক কার্যক্রম নেই

তিনি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপপ্রধানও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, তুরস্কে ইরানের কোনো সম্পদ জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করা হয়নি।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও যুক্তরাষ্ট্রের একগুঁয়েমি

বাকায়ি জানান, ইরানের কূটনৈতিক মিশন গত কয়েক মাস ধরে জাতিসংঘ সদরদপ্তর  (নিউইয়র্ক)-এ সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে, যাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর অবৈধ পদক্ষেপ রোধ করা যায়।

তিনি বলেন, ইরান কিছু ইউরোপীয় প্রস্তাবের প্রতি যুক্তিসঙ্গত নমনীয়তা প্রদর্শন করেছিল, কিন্তু তাতে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি।

“ইরানের পক্ষ থেকে বারবার গঠনমূলক প্রস্তাব গ্রহণের পরও ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছে,” — বলেন বাকায়ি। “ওয়াশিংটনের নীতি শুরু থেকেই স্পষ্ট— তারা নিরাপত্তা পরিষদের পুরনো প্রস্তাবগুলো পুনর্বহাল করতে চায়, যেন ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ বজায় থাকে।”

পটভূমি: ‘স্ন্যাপব্যাক’ কী

‘স্ন্যাপব্যাক’ হলো ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তি (JCPOA)-এর একটি ধারা, যার অধীনে কোনো পক্ষ যদি মনে করে ইরান চুক্তিভঙ্গ করেছে, তাহলে সে জাতিসংঘের আগের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের দাবি তুলতে পারে।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পরও তারা এই ধারা সক্রিয় করার চেষ্টা করেছিল, যা তখন আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ঘোষিত হয়।

২০২৫ সালে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য পুনরায় এই প্রক্রিয়া সক্রিয় করার ঘোষণা দেয়, যা ইরান আইনি প্রতারণা ও রাজনৈতিক অপব্যবহার” বলে আখ্যা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button