ইরানের ‘রেড লাইন’ স্পর্শ না করতে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে শামখানির সতর্কবার্তা
রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী শামখানি পারস্য উপসাগর–সংলগ্ন আরব দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, ইরানের তিন দ্বীপ এবং আরাশ গ্যাসক্ষেত্র নিয়ে পারস্য উপসাগর সহযোগিতা পরিষদের (পিজিসিসি) পুনরাবৃত্ত অভিযোগ কোনোভাবেই গঠনমূলক নয়। তাঁর দাবি, প্রতিবেশী দেশগুলোর উচিত আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা, ইরানি জনগণের ‘রেড লাইন’কে চ্যালেঞ্জ করা নয়।
এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় শামখানি বলেন, “ইরানের তিন দ্বীপ ও আরাশ গ্যাসক্ষেত্র নিয়ে পিজিসিসির দাবিগুলো ভিত্তিহীন এবং অগঠনমূলক। ১২ দিনের যুদ্ধের সময়ও আমরা সংযম দেখিয়েছি, যদিও ওই সময় কিছু দেশ প্রকাশ্যে আগ্রাসীদের সমর্থন জানিয়েছিল।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “পারস্য উপসাগরে ইরানের শক্তি ও সক্ষমতাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্য ক্ষতিকর হবে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা প্রতিবেশীদের দায়িত্ব—ইরানের জাতীয় সীমারেখা নিয়ে খেলা নয়।”
বুধবার রাতে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত পিজিসিসির ৪৬তম শীর্ষ সম্মেলনের শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে পরিষদ আবারও তিন ইরানি দ্বীপ—আবু মুসা, গ্রেট তুনব ও লিটল তুনব—এবং আরাশ গ্যাসক্ষেত্র নিয়ে তাদের পুরোনো অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। পরিষদ দাবি করে, দ্বীপগুলো ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ এবং সেগুলোর জলসীমা, আকাশসীমা ও একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর আমিরাতেরই সার্বভৌমত্ব রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আরাশ (আল-দুরা) গ্যাসক্ষেত্র সম্পূর্ণভাবে কুয়েতের জলসীমায় অবস্থিত এবং যৌথ নিরপেক্ষ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা কেবল কুয়েত ও সৌদি আরবের—যারা এর সম্পদ ব্যবহারের একক অধিকারী।
ঐতিহাসিক নথি, আইনি দলিল ও ভূগোলভিত্তিক প্রমাণসমূহে দীর্ঘদিন ধরেই এই তিন পারস্য উপসাগরীয় দ্বীপকে ইরানের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবুও সংযুক্ত আরব আমিরাত বহু বছর ধরে দ্বীপগুলোর ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। ১৯২১ সালে দ্বীপগুলো ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে গেলেও ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর ব্রিটিশ বাহিনী অঞ্চল ত্যাগ করার পর—এবং ইউএই ফেডারেশন ঘোষণার মাত্র দুই দিন আগে—ইরান দ্বীপগুলোর ওপর নিজের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।



