লেবাননের এক ইঞ্চি জমিও কাউকে নিতে দেব না: হিজবুল্লাহ প্রধান
রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
মিডিয়া মিহির: হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম লেবাননের স্বাধীনতা সুরক্ষায় দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে বলেছেন, দেশের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না এবং হিজবুল্লাহ তা কখনোই মেনে নেবে না।
সোমবার বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হাজ মোহাম্মদ আফিফের স্মরণসভায় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি শহিদ কমান্ডার হাজ মোহাম্মদ আফিফের গুণাবলি স্মরণ করে বলেন, তিনি ছিলেন দক্ষ লেখক, অনবদ্য বক্তা, বিশাল সাংস্কৃতিক জ্ঞান ও সঠিক বিচারের অধিকারী একজন ব্যক্তিত্ব।
তিনি জানান, উম্মাহর শহিদদের নেতার শাহাদতের পর হাজ মোহাম্মদ আফিফ প্রস্তাব করেছিলেন—বিভিন্ন ইস্যুতে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বেশ কিছু সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা উচিত, কারণ কিছু বিষয়ে মহাসচিবের ভাষণ যথেষ্ট নয়।
শেখ নাঈম কাসেম বলেন, “হাজ মোহাম্মদ আফিফ ইসলামী অঙ্গন, রাজনৈতিক ক্ষেত্র এবং প্রতিরোধের ধারায় গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। তিনি নির্ভুল বিশ্লেষণ ও সঠিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের এক অনন্য উদাহরণ ছিলেন এবং প্রতিরোধের ধারণাগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে বড় ভূমিকা রেখেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শত্রুরা সাংবাদিকদের টার্গেট করেছে কারণ তারা যুদ্ধের সত্য প্রকাশ করতেন, বাস্তবতা তুলে ধরতেন এবং অত্যাচারী শক্তির প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে লড়তেন।”
বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আজ লেবাননে যা ঘটছে তা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যর্থতা নয়; বরং লেবাননকে দুর্বল করে সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি স্পষ্ট আগ্রাসন। তারা লেবাননকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রাষ্ট্র ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থে চিন্তা করা সরকারের দায়িত্ব। আগ্রাসনের মোকাবিলায় কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।”
শেখ নাঈম কাসেম সতর্ক করে বলেন, “লেবাননের ওপর বাইরের কর্তৃত্ব বা অভিভাবকত্ব চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এটি কোনোভাবেই দেশের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “লেবাননের বড় বড় সংকটের পেছনে আমেরিকার ভূমিকা আছে। আমেরিকাই এসব সমস্যার মূল উৎস।”
তিনি সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আহ্বান জানান, “যে পদক্ষেপগুলো কেবল হিজবুল্লাহ নয়, বরং পুরো লেবাননের জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে—সেগুলো বন্ধ করুন।”
প্রসঙ্গত তিনি বলেন, “পার্লামেন্টকে অচল করে রাখা উচিত নয়; এর কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।”
স্পিকার নাবিহ বেরির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এগুলো ঘৃণ্য প্রচেষ্টা, যার উদ্দেশ্য বিদেশি অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠার পথ সহজ করা ছাড়া আর কিছু নয়।”
ভাষণের শেষে তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দেন— “স্বাধীনতার অর্থ হলো কোনো বিদেশি শক্তির অধীন না থাকা। লেবাননের এক ইঞ্চি জমিও কাউকে নিতে দেওয়া হবে না—আমরা তা কখনোই হতে দেব না।”



