ধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদবিশ্ব

হাদিসে “খাইরুল কুরুন” ও সালাফি মতবাদের বৈধতার সূত্র

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ইসলামের প্রারম্ভিক তিন যুগ—নবীর যুগ, সাহাবার যুগ ও তাবেঈনের যুগ—কে সালাফি চিন্তাবিদরা ইসলামের “সর্বোত্তম যুগ” বলে ঘোষণা করেছেন। এই ধারণার ভিত্তি তারা স্থাপন করেছেন একটি প্রসিদ্ধ হাদিসের ওপর, যেখানে নবী করিম ﷺ “তিন শ্রেষ্ঠ যুগ”-এর মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন এবং পরবর্তী প্রজন্মের নৈতিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সালাফি চিন্তাধারার অন্যতম ধর্মীয় ভিত্তি হলো নবী করিম ﷺ–এর একটি হাদিস, যা “খাইরুল কুরুন” নামে পরিচিত:

خیر الناس قرنی، ثم الذین یلونهم، ثم الذین یلونهم، ثم یجیء اقوام تسبق شهادة احدهم یمینه و یمینه شهادته
অর্থাৎ — মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো আমার যুগের মানুষ; তারপর তারা, যারা তাদের পর আসবে; এরপর তারা, যারা তাদের পরবর্তী হবে। এরপর এমন একদল মানুষ আসবে, যাদের সাক্ষ্য ও শপথ একে অপরকে অগ্রাহ্য করবে।

এই হাদিসের ওপর ভিত্তি করে সালাফিরা মনে করে, ইসলামের প্রথম তিন শতাব্দীই হলো বিশুদ্ধ বিশ্বাস, চিন্তা ও কর্মের যুগ। তারা বিশ্বাস করে, এই সময়কার মুসলমানরা ইসলামী আদর্শের প্রকৃত রূপ সংরক্ষণ করেছেন।

তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নবী করিম ﷺ শুধু এই তিন যুগকে “শ্রেষ্ঠ” বলে ঘোষণা করেননি, বরং এর পরবর্তী যুগগুলোতে নৈতিক বিভ্রান্তি ও সত্য-মিথ্যার মিশ্রণের আশঙ্কার কথাও বলেছেন। ফলে সালাফি মতবাদে বলা হয়—ইসলামের যে কোনো চিন্তা, ব্যাখ্যা বা সংস্কারকে বৈধ হতে হলে তা অবশ্যই এই “তিন শ্রেষ্ঠ যুগের” ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। ইসলামী পরিভাষায় এই যুগগুলোকে বলা হয় কুরুনে মুফাজ্জালা” — অর্থাৎ শ্রেষ্ঠতম যুগসমূহ।

লেখক: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ড. সাইয়্যেদ মাহদী আলীজাদেহ মুসাভী, সালাফিগারী ও ওহাবীয়াত, খন্ড ১, পূষ্টা ৩৪।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button