প্রকৃত জয়: কর্তব্য পালনই ফলাফলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: সত্যিকারের জয় কখনো ফলাফলের উপর নির্ভর করে না, বরং তা নির্ভর করে আল্লাহর কর্তব্য পালন করার ওপর। একজন মকতবী মুসলিম সব পরিস্থিতিতে নিজের ধর্মীয় ও নৈতিক কর্তব্যকে মাপকাঠি হিসেবে ধরে, ব্যক্তিগত স্বার্থ বা মানুষের প্রশংসা নয়। ইমাম হুসাইন (আ.) কারবালায় যাত্রা করেছেন ঠিক এই নীতি অনুসরণ করে—কর্তব্যের জন্য, ফলাফলের জন্য নয়।
১. কর্তব্য পালন বনাম ফলাফল
সত্যিকারের জয় আল্লাহর নির্দেশিত কর্তব্য পালন করা, ফলাফলের ওপর নির্ভরশীল নয়। যে ব্যক্তি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ, সে স্বল্পকালীন সুবিধা বা স্বার্থ অর্জন করলেও প্রকৃতভাবে হেরে যায়।
যে ব্যক্তি নিজের কর্তব্য পালন করে না, সে হেরে যায়, যদিও সে সাময়িক সুবিধা অর্জন করুক।
অন্যদিকে, যারা কর্তব্য পালনে অটল থাকে, তারা প্রকৃতভাবে বিজয়ী, এমনকি যদি তাদের জন্য আঘাত বা মৃত্যু আসে। কারণ মূল লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, মানুষকে খুশি করা নয়।
২. মকতবী মুসলিমের চরিত্র
মকতবী মুসলিমের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ পায় তখন, যখন সে জীবনের সকল ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় কর্তব্যকে মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করে। এটি ব্যক্তিগত ইচ্ছা, মানুষকে খুশি করা বা স্বার্থের তুলনায় সর্বোচ্চ মানদণ্ড।
মকতবী মুসলিম সেই ব্যক্তি, যে সব পরিস্থিতিতে কর্তব্যকে প্রাধান্য দেয়।
৩. ইমাম হুসাইনের (আ.) উদাহরণ
মক্কা থেকে কর্বালার পথে যাত্রা করার সময় অনেকেই ইমাম হুসাইন (আ.)কে সতর্ক করে থামাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জবাব দেন:
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আল্লাহর তাকদির যা-ই হোক না কেন, আমি কেবল আল্লাহর কর্তব্য পালন করতে চাই, তা আমার লাভের হোক বা ক্ষতির।
এই মনোভাব দেখায়, যে কর্তব্যের প্রতি অটল থাকা, ফলাফল বিবেচনা না করা, একজন মুসলিমের জীবনের মূল নীতি।
৪. মূল শিক্ষা
১. কর্তব্য পালনই সত্যিকারের জয়।
২. ব্যক্তিগত স্বার্থ, মানুষের প্রশংসা বা ফলাফল কখনো মাপকাঠি হতে পারে না।
৩. ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের জন্য ধৈর্য, আত্মত্যাগ ও অটল বিশ্বাস অপরিহার্য।
৪. ইমাম হুসাইনের জীবন এটি চিরন্তন প্রমাণ: কর্তব্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা কখনো ব্যর্থ হয় না।



