ইমাম হাসান আসকারী (আ.) এবং শিয়াদের জন্য গায়বাতের প্রস্তুতি
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫

মিডিয় মিহির: হুজ্জাতুল ইসলাম রেজা মুহাম্মাদি, ইসলামি ইতিহাস ও ধর্মীয় বিষয়ের বিশ্লেষক, জানান যে এগারতম ইমাম হাসান আসকারী (আ.) ছিলেন শিয়াদের ইতিহাসে এক অনন্য চরিত্র, যিনি সরাসরি উপস্থিতি থেকে গায়বাত কালের সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। তাঁর কৌশল ও নির্দেশনা শিয়াদের ধর্মীয় নেতৃত্ব ও আধ্যাত্মিক ধারাকে ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
১: এগারতম ইমামের বিশেষ দায়িত্ব
মুহাম্মাদি ব্যাখ্যা করেন, ইমাম হাসান আসকারী (আ.) বিশেষতা শুধুমাত্র পূর্ববর্তী ইমামদের সাধারণ দায়িত্বে সীমাবদ্ধ ছিল না। শাসনকালে ইসলামী সমাজে ধারা ও মতাদর্শের প্রতি প্রভাবশালী বাহিনী প্রতিরোধের পাশাপাশি, তিনি শিয়াদের গায়বাত কালের জন্য প্রস্তুত করার দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
২: সরাসরি উপস্থিতি থেকে মধ্যস্থতায়
ইমাম হাসান আসকারী (আ.) শিয়াদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ কমিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সম্পর্ক বজায় রাখার কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন। এটি ছিল গায়বাত কালের জন্য প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। শিয়ারা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিখেছিল কীভাবে ইমামের সরাসরি উপস্থিতি ছাড়াই তার নির্দেশনা অনুসরণ করা যায়।
৩: সীমিত সময়ে মহান কাজ
মুহাম্মাদি উল্লেখ করেন, ইমাম হাসান আস্কারীর (আ.) আমল কেবল ছয় বছর স্থায়ী হলেও, তিনি সেই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে শিয়াদের গায়বাতকালের জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। কঠোর আব্বাসি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছিলেন।
৪: ধারাবাহিকতা ও ইতিহাসের পরিবর্তন
ইমাম হাসান আসকারীর (আ.) পদক্ষেপের ফলশ্রুতিতে, শিয়াদের সমাজ সরাসরি ইমামের উপস্থিতি ছাড়াও ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এই ধারা ইমাম হাদি (আ.) থেকে শুরু হয়ে এগারতম ইমামের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়।
৫: গায়েবি কালের জন্য প্রস্তুতি
ইমামের নীতি ছিল প্রায়শই আড়ালে বসে থাকা, যাতে শিয়া অনুসারীরা সরাসরি দেখা ছাড়াই প্রশ্ন করতে পারে এবং তাদের বিশ্বাস ও আনুগত্যকে পরীক্ষা করা যায়। এটি ছিল গায়েবি কালে শিয়াদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আধ্যাত্মিক দৃঢ়তা বৃদ্ধির একটি কার্যকরী অনুশীলন।
উপসংহার:
ইমাম হাসান আসকারীর (আ.) সময়কাল ছিল উপস্থিতি ও গায়বাতকালের সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাঁর কৌশল ও নির্দেশনা না থাকলে শিয়াদের সমাজ গায়বাতকালের জন্য প্রস্তুত হতো না। তাই এগারতম ইমামের অবদান কেবল ইমামতের ধারাবাহিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে নয়, বর্তমান ফিকাহি নেতৃত্ব ও ধর্মীয় পরিচয় রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ও সিদ্ধান্তমূলক।



