Sliderকুরআন শিক্ষাধর্ম ও বিশ্বাসসংবাদ বিশ্লেষণ
মাহে রমযান সুস্বাগতম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মাহে রমযান সুস্বাগতম শাহরুল্লাহ (আল্লাহর মাস), সিয়াম সাধনা সংযম ও রোযার মাস, রবিউল কুরআন (পবিত্র কুরআনের বসন্ত), ইবাদত বন্দেগী, ক্ষমা (মাগফিরাত ও গুফরান), দোযখের আগুন থেকে মুক্তি, রহমত ও বরকতের মাস মাহে রমযানের শুভাগমন উপলক্ষে সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।
রমযান ইবাদতের মৌসুমের সর্বশেষ মাস। এ মাসেই রয়েছে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর (মহিমার রাত) যার জন্য এ মাস অন্য সকল মাস হতে উত্তম। কারণ, রমজান ব্যতিত অন্যান্য মাসগুলোতে কদরের রজনীর মতো উত্তম রজনী নেই। এ মাসে ইবলিস শয়তান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের শিকল ও জিঞ্জিরে বাধা হয় রোযা রাখার মাধ্যমে। তাই এ মাসে যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে খালিস নিয়ত ও দিলে অর্থাৎ নিষ্ঠার সাথে রোযা রাখে তার এ রোযা উদ্ধত ইবলীস শয়তান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের বেঁধে ফেলে। তাই এ মাসে রোযা যত শক্তিশালী ও খালিস (নিষ্ঠা পূর্ণ) হবে শয়তান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা ততই শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে দুর্বল হবে। এ মাসের প্রতিটি দিন ও রাতের প্রতিটি মূহুর্ত, ক্ষণ, সময় ও ঘন্টা পূণ্য ও বরকতময়।
মহান আল্লাহর রহমত এ মাসে অবারিত ধারায় বর্ষিত হতে থাকে বান্দাদের উপর। এ মাস নফল ইবাদত বন্দেগী, নামায, দুআ ও মুনাজাতের মাস। অজস্র দুআ, মুনাজাত, নামায, যিয়ারত বর্ণিত হয়েছে দু’আ ও মুনাজাতের কিতাব ও গ্রন্থসমূহে। এ মাসে দান-খয়রাত ও সদকার অশেষ সওয়াব ও পূণ্য রয়েছে। তাই সবার উচিত সওয়াব, পূণ্য, নেকী, কল্যাণ-মঙ্গল, খাইর ও বরকতের দিকে ছুটে আসা, পরোপকার সাধন করা, মেহমান ও রোযাদার ব্যক্তিদের ইত’আম ও আপ্যায়ন করা।
এ মাস মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের যিয়াফত ও আপ্যায়নের মাস। সায়েম অর্থাৎ রোযাদার রোযা রেখে ইফতার ও সেহরির মূহুর্তে মহান আল্লাহর মেহমান (যাইফুর রহমান ضیف الرحمن) হয়ে ঐশ্বরিক দস্তরখানে বসে পার্থিব খাদ্য খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগী, দু’আ ও মুনাজাত কালে রূহানী (আধ্যাত্মিক) ঘাযা (খাদ্য) পরিবেশনের মাধ্যমে আপ্যায়িত হয়। এমনকি এ মাসে সায়েমের (রোযাদার ব্যক্তির) নিদ্রাও ইবাদত বলে গণ্য হয়। তাই কেমন ও কত বড় বরকত ও পূণ্যময় মাস এ মাহে রমযান !!!
মহানবী (সা) থেকে বর্ণিত আছে যে-
رُوِيَ عَنِ اَلنَّبِيِّ صَلَّى اَللَّهُ عَلَيْهِ وَ آلِهِ أَنَّهُ قَالَ: نَوْمُ اَلصَّائِمِ عِبَادَةٌ وَ نَفَسُهُ تَسْبِيحٌ .
রোযাদারের নিদ্রা ইবাদত এবং তার নিশ্বাস হচ্ছে তাসবীহ। এ মাস তওবা ও ইনাবার (অনুশোচনা) মাস। তাই এ মাসে নিষ্ঠার সাথে অধিক অধিক ইস্তিগফার ও তওবা করা উচিত মহান আল্লাহর দরবারে। ইমাম সাদিক্ব (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে “যে ব্যক্তি রমযান মাসে ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে না এ রমযান থেকে আগামী রমযান মাস পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করা হবে না তবে আরাফাত দিবসে আরাফাতের ময়দানে তার উপস্থিতি ব্যতীত” (পবিত্র রমযান মাসে ক্ষমাপ্রাপ্ত হওয়ার সৌভাগ্য না হলে সে আরাফাত দিবসে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে)।
عن الصادق (ع) : أنه من لم یُغْفَرْ لَهُ فِي شهر رمضان لم یغفر له إلی القابل إلا أن یشهد عرفة .
এ মাসে রোযা শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকাই যথেষ্ট নয় বরং গীবৎ, অশোভন, অশালীন-অশ্লীল ও মিথ্যা কথা বলা ও অশ্রাব্য-কুস্রাব্য উক্তি এবং ঝগড়া-বিবাদ করা থেকে মুখ, কণ্ঠ ও জিহ্বা, হারাম নিষিদ্ধ জিনিস ও বিষয় দেখা ও অবলোকন করা থেকে চর্ম চক্ষু, হারাম নিষিদ্ধ কথা ও শব্দ শ্রবণ করা থেকে কর্ণ এবং সব ধরনের গর্হিত ও অন্যায় কাজ-কর্ম থেকে হাত-পা ও শরীরের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং নোংরা ও কুচিন্তা থেকে মন-মস্তিষ্ককে বিরত ও মুক্ত রাখতে হবে। তাহলেই রোযা ও সিয়াম সাধনার রূহ (মূল সারবত্তা ও তাৎপর্য) অর্জিত হবে। আর তা না হলে রোযা শুধু ক্ষুধা ও পিপাসার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই হবে না। পবিত্র কুরআনের ভাষায় ও মহানবীর (সা) দৃষ্টিতে প্রকৃত রোযা ও সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাকওয়া-পরহেযগারী অর্জন ও অবলম্বন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হচ্ছে:
یا ایها الذین آمنوا کتب علیکم الصیام کما کتب علی الذین من قبلکم لعلکم تتقون
হে ঈমানদারগণ! যেমনি ভাবে তোমাদের পূর্বেবর্তীদের ওপর রোযা ফরয করা হয়েছিল ঠিক তেমনি তোমাদের ওপর রোযা ফরয করা হয়েছে; আশা করা যায় যে তোমরা সতর্ক ও সাবধান হবে (এবং মহান আল্লাহকে ভয় করবে অর্থাৎ মুত্তাকী-পরহেযগার হবে)। ( সূরা-ই বাকারা:১৮৩)
পবিত্র কুরআনে বহুবার (প্রায় ৬০বার) এরশাদ হয়েছে মহান আল্লাহকে ভয় করো তোমরা (অর্থাৎ আল্লাহর ব্যাপারে সাবধান ও সতর্ক হও তোমরা اٍتٌقُوا اللٌٰهَ ) পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে:
يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقاتِهِ وَلا تَموتُنَّ إِلّا وَأَنتُم مُسلِمونَ
হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহকে যেভাবে ভয় করা উচিত ও বাঞ্ছনীয় ঠিক সেভাবে তোমরা তাঁকে ভয় করো (তাঁর ব্যাপারে তোমরা সতর্ক ও সাবধান হও) এবং (মহান আল্লাহর প্রতি সত্যিকার খাঁটি) মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী) না হয়ে তোমরা কখনোই মৃত্যু বরণ করো না ( সূরা-ই আল-ই ইমরান:১০২)।
আরেকটি আয়াতে এরশাদ হচ্ছে:
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ وَٱسۡمَعُواْ وَأَطِيعُواْ وَأَنفِقُواْ خَيۡرࣰا لِّأَنفُسِكُمۡۗ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفۡسِهِۦ فَأُوْلَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ
নিজেদের সমুদয় ও সার্বিক সাধ্য, শক্তি ও সামর্থ্য নিয়োজিত করে তোমরা মহান আল্লাহকে ভয় করো (অর্থাৎ তাঁর ব্যাপারে সাবধান ও সতর্ক হও), শ্রবণ করো, আনুগত্য করো এবং দান (ইনফাক) ও ব্যয় করো তাহলে তা তোমাদের নিজেদের জন্য উত্তম হবে; আর যারা স্বীয় নফস ও প্রবৃত্তির কার্পণ্য ও কৃপণতা থেকে নিজেদের সংরক্ষিত রাখে তারাই (আসলে) সফলকাম। (সূরা-ই তাঘাবুন:১৬)
এ আয়াতের ভিত্তিতে তাকওয়া-পরহেযগারী অর্জন ও অবলম্বনের জন্য সার্বিক সামর্থ্য, শক্তি, শ্রম ও চেষ্টা-প্রচেষ্টা নিয়োজিত করা উচিত ও অবশ্যকর্তব্য (ফরয)। আর এ তাকওয়া অর্জন ও অবলম্বনের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় ও মাধ্যম রোযা ও সিয়াম সাধনা। প্রকৃত প্রস্তাবে রোযা বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমযান শরীফের রোযা মুমিনদেরকে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাঙ্ক্ষিত ও বাঞ্ছনীয় তাকওয়া অর্জনের দিকে হিদায়ত (পরিচালিত) করবে ইনশাআল্লাহ।
পবিত্র কুরআনে আরও বলা হয়েছে:
وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ ۖ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ
আর তোমাদের রোযা রাখা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে। (সূরা-ই বাকারা:১৮৪)
নিঃসন্দেহে রোযা রাখা উত্তম। কারণ এতে বান্দার তাকওয়া-পরহেযগারী এবং অসীম সওয়াব অর্জিত হয়। আর যেহেতু রিপূ ও প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা, তাড়না ও প্ররোচনার বিপক্ষে রোযা রাখা হয় সেজন্য তা রিয়া (লোক দেখানো) থেকে মুক্ত। জনসমক্ষে কেউ পানাহার, সহবাস এবং রোযা ভঙ্গকারী কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে কিন্তু নির্জনে ও মানুষের দৃষ্টির অন্তরালে সে পানাহার, সহবাস (যৌনসংগম) এবং রোযা ভঙ্গকারী কাজ আঞ্জাম দিতে সক্ষম। কিন্তু সে মহান আল্লাহর জন্য এসব কর্ম থেকে বিরত থাকে ও রোযা রাখে যা তার তাকওয়া পরহেযগারীর কারণ। আর তাই এ কারণেই মহান আল্লাহ অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এক হাদীসে কুদসীতে বলেছেন:
الصوم لي وأنا أجزي به
রোযা আমার জন্য এবং স্বয়ং আমি এর প্রতিদান ও পুরস্কার দিব (দ্রঃ তাহযীবুল আহকাম:৪/১৫২/৪২০; আল-ফকীহ্:২/৭৫/১৭৭৩; আল-কাফী:৪/৬৩/৬; সহীহুল বুখারী:৬/২৭২৩/৭০৫৪ এবং পৃ:২৭৪১/৭১০০; সহীহ মুসলিম:২/৮০৭/১৬৫)
যেহেতু রোযা রিয়া মুক্ত সেহেতু তা ইখলাস ও নিষ্ঠা দিয়ে পূর্ণ এবং দোযখের আগুন থেকে ঢাল অর্থাৎ রক্ষাকবচ স্বরূপ। মহানবী (সা.) বলেছেন:
قال رسول الله (صلی الله علیه وآله وسلم): )الصّوم جَنَّة مِنَ النّار
(রোযা দোযখের আগুন থেকে ঢাল (রক্ষাকবচ) স্বরূপ। হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) বলেছেন: (বান্দার মাঝে) ইখলাস (নিষ্ঠা) দৃঢ় প্রোথিত ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মহান আল্লাহ …. রোযা ফরয করেছেন। তবে এ মহান আধ্যাত্মিক উপকার অর্জন ও লাভের পাশাপাশি রোযার শারীরিক (স্বাস্থ্যগত) ও আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উপকারও আছে।
মহানবীর (সা.) এর প্রসিদ্ধ হাদীস থেকে স্বাস্থ্যের ওপর রোযার ইতিবাচক প্রভাব ও উপকার স্পষ্ট হয়ে যায়:
صُوْمُوْا تَصِحُّوْ
ا তোমরা রোযা রাখো তাহলে তোমরা স্বাস্থ্যবান হবে ও থাকবে (দ্রঃ তাবরানীর আল-মু’জামুল আওসাত, খ:৮, পৃ:১৭৪; কুতব রাওয়ান্দীর মুহাজুদ দা’আওয়াত, পৃ:৭৬ এবং কাযী আবূ হানীফা নু’মানের দা’আইমুল ইসলাম, খ:১, পৃ:৩৪২) রোযা রাখার মাধ্যমে ধনীরা ক্ষুধা-পিপাসার কষ্ট অনুভব করে দরিদ্র দুঃস্থদের ওপর দয়াপরবশ
হয়ে তাদের খাদ্য পানীয়ের ব্যবস্থা করার জোর তাগিদ অনুভব করে এবং বাস্তব উদ্যোগ নেয়।
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: হামযা ইবনে মুহাম্মাদ বলেন, আমি আবূ মুহাম্মদ আল-আস্কারীর (আ)-এর কাছে পত্রে লিখেছিলাম: “কেন মহান আল্লাহ রমযানের রোযা ফরয করেছেন?” অতঃপর ইমাম (আ.)-এর কাছ থেকে জবাব আসল, যাতে ধনীরা ক্ষুধার জ্বালা ও কষ্ট উপলব্ধি করে এবং গরীব-দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় (দ্রঃ আল-কাফী: ৪/১৮১/৬)।
আর এর ফলে সমাজে ঐক্য ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি জোরদার হবে এবং মুসলিম সমাজে আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে যা ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধান হ্রাস করবে। রোযাদারদের ইত’আমের (আপ্যায়ন) অনেক সওয়াব রয়েছে যার সামাজিক সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অপরিসীম। মসজিদ, হুসাইনিয়া, খানকাহ, রেডিও টেলিভিশন, সংবাদ মাধ্যম, সোস্যাল মিডিয়া, স্কুল-মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমিলনায়তন এমনকি সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (বিশেষ করে পবিত্র কুরআন কেন্দ্রিক), শিক্ষা ও উপদেশমূলক আলোচনা, দরসে আখলাক, পবিত্র কুরআন তাফসীর ও তিলাওয়াত, হাদীস ভিত্তিক আলোচনা, দু’আ, তাওয়াশীহ, হামদ ও না’ত পাঠের অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়োজন করা হয়। এ ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড রমযান
মাসে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রচলিত আছে। কদরের রজনীসমূহ (১৯, ২১, ২৩ ও ২৭) এবং ১৯, ২০ ও ২১ এর রাতগুলোয় হযরত আলী (আ.)এর শাহাদাতের শোকানুষ্ঠান খুব ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হয়। রমযান মাসে খুমুস ও যাকাত আদায় এবং দান-সদকা ব্যাপকভাবে করা হয় সমগ্র মুসলিম বিশ্বে যা আসলে মুসলিম বিশ্বের অর্থনীতির ওপর প্রগাঢ় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া পরিবারের সবার জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা ও রোযাদার অতিথি আপ্যায়নকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিশ্বে অর্থনৈতিক লেনদেন বৃদ্ধি পায় এবং বাজার সমূহের ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড ও তৎপরতা বেশ বৃদ্ধি পায় এবং ব্যবসায়িক মহলের বাৎসরিক আয়ের এক উল্লেখযোগ্য অংশ এই রমযান মাস ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অর্জিত হয় এবং ব্যবসায়ীরাও তাদের এ বিপুল আয় থেকে অনেক দান-সদকা ও জনহিতকর কার্য সম্পাদন করে থাকেন।
মুসলিম বিশ্বের স্বচ্ছল ব্যক্তিরা রমযানের শেষে ফরয যাকাত-ই ফিতরা আদায় করে যার ফলে গরীব দুঃখী ও অভাবীরাও ঈদুল ফিতরের আনন্দে শরীক হতে পারে। রমযানের শেষে ঈদুল ফিতর এবং মুসলিম বিশ্বে ঈদ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। পবিত্র মাহে রমযান বিদায়ের শোক ও বেদনার উপশম হচ্ছে এই ঈদুল ফিতরের আনন্দ উৎসব যা মহান আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা.)-এর পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাপুরস্কার স্বরূপ। ঈদুল ফিতরের নামাজে যোগদান ও ঈদকে ঘিরে নতুন পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান এবং বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার ও মিষ্টান্ন দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন, ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন এবং ঈদের আনন্দ অনুষ্ঠান বিশেষ করে বহু মুসলিম দেশে অনেক যুবক-যুবতীর শুভ পরিণয় ও বিবাহের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ঈদুল ফিতরের দিনে ও রাতে। মাহে রমযান মুসলিম বিশ্বের জন্য অশেষ উপকার, কল্যাণ, বরকত ও রহমত নিয়ে উপস্থিত হয়েছে আমাদের কাছে। আমাদের সবার উচিত এ মাসের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা এবং এ মাসে মহান আল্লাহর রহমত, বরকত ও নেয়ামত থেকে উত্তমভাবে উপকৃত হওয়া। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম লাইলাতুল কদরের সম্ভাব্য রাত সমূহে সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক
মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান রমযান ১৪৪৬ হি.