কুরআনইতিহাসকুরআন শিক্ষাতাফসীরধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদবিশ্ব

হাদিসে কিসা ও আয়াতে তাতহীর: কেন শিয়ারা চৌদ্দজনকে নিষ্পাপ মনে করে?

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মিডিয়া মিহির: সংক্ষিপ্ত উত্তর:

প্রথমত, এই আয়াতে যে পবিত্রতার কথা বলা হয়েছে, তা পরিপূর্ণ ও চূড়ান্ত সীমাবদ্ধতা নয়, বরং একটি আপেক্ষিক সীমারেখা। অর্থাৎ আয়াতটির উদ্দেশ্য আহলুল বাইতের পরিচয় স্পষ্ট করা এবং নবী–পরিবারের বাইরের কিছু গোষ্ঠী—বিশেষত রাসূল ﷺ–এর স্ত্রীদের—এই বিশেষ মর্যাদার অন্তর্ভুক্ত নয় বলে বোঝানো; কিন্তু যাঁরা প্রকৃত অর্থে আহলুল বাইতের অন্তর্গত, তাঁদের বাইরে রেখে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।

দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ হাদিসে সাকালাইন–এ আহলুল বাইতকে কুরআনের সমমর্যাদায় দাঁড় করিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত হিদায়াতের দ্বিতীয় অবলম্বন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই হাদিস স্পষ্ট করে যে, প্রতিটি যুগেই আহলুল বাইতের মধ্য থেকে এমন ব্যক্তিত্ব বিদ্যমান থাকবেন, যাঁরা কুরআনের মতোই অনুসরণযোগ্য ও পথপ্রদর্শক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। যেহেতু কুরআন চিরকাল ভুলত্রুটিমুক্ত, তার সহচর আহলুল বাইতও অবশ্যই সেই নিষ্পাপতার গুণে ভূষিত হবেন।

তৃতীয়ত, যখন আয়াতে তাতহীরের মাধ্যমে প্রথম পাঁচজন নিষ্পাপের (নবী ﷺ, ফাতিমা (সা.আ.), আলী (আ.), হাসান (আ.) ও হুসাইন (আ.)ইসমাত সুপ্রতিষ্ঠিত হয়, তখন তাঁদের বাণী ও নির্দেশ পরবর্তী নিষ্পাপদের পরিচয় নির্ধারণে দলিল ও প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। কারণ যাঁরা নিজেরাই ভুল ও পাপ থেকে মুক্ত, তাঁদের বক্তব্য সত্য ও নির্ভরযোগ্য হওয়াই স্বাভাবিক।

অতএব, শিয়া দৃষ্টিভঙ্গিতে আয়াতে তাতহীর, হাদিসে সাকালাইন এবং নিষ্পাপদের ধারাবাহিক সাক্ষ্য—এই তিনের সমন্বয়েই চৌদ্দজন নিষ্পাপের বিশ্বাস সুসংহত ও অর্থবহ রূপ লাভ করেছে।

বিস্তারিত উত্তর:

নিষ্পাপ বা ইসমাত প্রমাণের আলোচনায় যে কুরআনিক আয়াতটি সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে, তা হলো সূরা আহযাবের ৩৩ নম্বর আয়াত, যা ইসলামী পরিভাষায় আয়াতে তাতহীর নামে পরিচিত। এই আয়াতটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ, হযরত আলী (আ.), হযরত ফাতিমা (আ.), ইমাম হাসান (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.)—এই পাঁচ পবিত্র ব্যক্তিত্বের ইসমাতের মৌলিক দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আয়াতে তাতহীর (সূরা আহযাব, ৩৩)

وَ قَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَ لَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ وَ أَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَ آتِينَ الزَّكَاةَ وَ أَطِعْنَ اللَّهَ وَ رَسُولَهُ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَ يُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

অর্থ:আর তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করো, প্রাচীন জাহেলি যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করো না; নামাজ কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ চান—হে আহলুল বাইত—তোমাদের থেকে সব অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।”

এই আয়াতের ভাষা স্পষ্টভাবে আল্লাহ তাআলার তাক্বিনিক (সৃষ্টিগত) ইচ্ছার কথা ঘোষণা করে—যার মাধ্যমে তিনি আহলুল বাইতকে পাপ, বিচ্যুতি ও অপবিত্রতা থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে রাখতে চান। কালামশাস্ত্রের পরিভাষায় এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যই পরিচিত ইসমাত নামে।

আহলুল বাইত কারা? একটি বিশ্লেষণ

এখানে মৌলিক প্রশ্ন হলো—এই আয়াতে উল্লিখিত আহলুল বাইত” কারা? এবং কেন শিয়ারা বিশ্বাস করেন যে এই পবিত্রতার পরিসর কেবল পাঁচজনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাঁদের ধারাবাহিকতায় আরও নয়জন ইমাম যুক্ত হয়ে চৌদ্দজন নিষ্পাপের বিশ্বাস গড়ে উঠেছে?

বিশ্বস্ত হাদিস ও ঐতিহাসিক বর্ণনার আলোকে—শুধু শিয়া নয়, বরং আহলুস সুন্নাহর বহু নির্ভরযোগ্য গ্রন্থেও—এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ঐকমত্য পাওয়া যায় যে আয়াতে তাতহীরের আহলুল বাইত বলতে রাসূল ﷺ–এর স্ত্রীগণ বোঝানো হয়নি। বরং তাঁরা হলেন কেবল:

১- রাসূলুল্লাহ ﷺ

২- হযরত আলী(আ.)

৩- হযরত ফাতিমা(আ.)

৪- ইমাম হাসান(আ.)

৫- ইমাম হুসাইন(আ.)

এই পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসে।

প্রথমত: আয়াতে তাতহীরের সীমাবদ্ধতা আপেক্ষিক, চূড়ান্ত নয়

আয়াতে ব্যবহৃত “إِنَّمَا” (ইন্নামা) শব্দটি সীমারেখা নির্দেশ করে বটে, তবে এটি হাসর হাকিকি (চূড়ান্ত সীমাবদ্ধতা) নয়; বরং হাসর ইযাফি (আপেক্ষিক সীমাবদ্ধতা)।

অর্থাৎ, এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বোঝাতে চেয়েছেন—এই বিশেষ পবিত্রতার মর্যাদা রাসূলের স্ত্রীদের বা অন্যদের জন্য নয়, বরং এই পাঁচজনের জন্য নিশ্চিত। তবে এর অর্থ এই নয় যে ভবিষ্যতে তাঁদের মতো যোগ্য ও একই শ্রেণিভুক্ত অন্য কেউ এই মর্যাদার অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।

দ্বিতীয়ত: আয়াতের অবতরণকাল ও ভবিষ্যৎ প্রযোজ্যতা

আয়াতে তাতহীর যখন নাজিল হয়, তখন বাস্তবে এই পাঁচজন ছাড়া আর কোনো নিষ্পাপ ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন না। তাই আয়াতের সরাসরি সম্বোধন তাঁদের প্রতিই হয়েছে। কিন্তু কুরআনের বিধান কেবল নাজিল হওয়ার সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।

পরবর্তীকালে ইমাম হুসাইন(আ.)–এর বংশধারা থেকে জন্ম নেওয়া আরও নয়জন ইমাম, একে একে এই আহলুল বাইত” পরিচয়ের বাস্তব উদাহরণে পরিণত হন। এখানে আয়াতের প্রযোজ্যতা এসেছে শানে নুযুলের কারণে নয়, বরং তাত্ত্বিক সামঞ্জস্য ও বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে।

তৃতীয়ত: “উলুল আমর” আয়াতের সঙ্গে তুলনামূলক দৃষ্টান্ত

এই বিষয়টি বোঝার জন্য কুরআনের আরেকটি আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য—উলুল আমর সংক্রান্ত আয়াত।

সূরা নিসা, আয়াত ৫৯

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَ أَطِيعُوا الرَّسُولَ وَ أُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ

অর্থ: হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্য থেকে উলুল আমরের আনুগত্য করো।

রাসূল ﷺ–এর যুগে এই আয়াতের স্পষ্ট বাস্তব প্রয়োগ কেবল হযরত আলী (আ.)–এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল; কিন্তু পরবর্তী যুগে তাঁর বংশধর ইমামগণ একে একে এই নির্দেশনার বাস্তব রূপে পরিণত হন। ঠিক একইভাবে আয়াতে তাতহীরও সময়ের প্রবাহে নতুন নতুন বাস্তব দৃষ্টান্ত লাভ করেছে।

পরবর্তী ইমামদের ইমামত ও নিষ্পাপতার বিষয়ে স্বয়ং ইমামদের সুস্পষ্ট ঘোষণা

ইমাম হুসাইন (আ.)–এর পরবর্তী নয়জন ইমামের নিষ্পাপতা(ইসমাত)প্রমাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হলো—প্রত্যেক ইমামের পক্ষ থেকে তাঁর পরবর্তী ইমামের ইমামত ও নিষ্পাপতার বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা (তাসরীহ)।

যখন আয়াতে তাতহীর–এর মাধ্যমে ইমাম হুসাইন(আ.)–এর ইসমাত পূর্ণ ও নির্ভুলভাবে প্রমাণিত হয়, তখন আমরা তাঁরই বক্তব্যের ওপর নির্ভর করে তাঁর পুত্র আলী ইবনুল হুসাইন(ইমাম সাজ্জাদ, আ.)–কে পরবর্তী নিষ্পাপ ইমাম হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।

কারণ, একবার যদি প্রমাণিত হয় যে ইমাম হুসাইন(আ.) আয়াতে তাতহীরের “আহলুল বাইত”–এর অন্তর্ভুক্ত একজন নিষ্পাপ ব্যক্তি, যিনি কখনো মিথ্যা বলেন না বা বাস্তববিরোধী কথা উচ্চারণ করেন না—তাহলে তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত বক্তব্য সম্পর্কে আমাদের সামনে কেবল দুটি সম্ভাবনাই থাকে:

১.আমরা তাঁর বক্তব্য গ্রহণ করি—এর অর্থ হবে, আমরা ইমাম সাজ্জাদ (আ.)–এর ইমামত ও ইসমাত মেনে নিলাম;

২.অথবা আমরা তাঁর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করি—যার অর্থ দাঁড়ায়, আমরা ইমাম হুসাইন(আ.)–এর কথাকে ভুল বলে ধরে নিচ্ছি এবং কার্যত তাঁর ইসমত অস্বীকার করছি।

দ্বিতীয় সম্ভাবনাটি যেহেতু আমাদের পূর্বস্বীকৃত ধারণা—অর্থাৎ ইমাম হুসাইন(আ.) নিষ্পাপ—এর সম্পূর্ণ পরিপন্থী, তাই যুক্তিগতভাবে প্রথমটিই গ্রহণযোগ্য ও অপরিহার্য।

হাদিসে সাকালাইন-এর আলোকে “আহলুল বাইত”-এর প্রকৃত পরিধি

রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর উম্মতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন।তিনি সর্বদা এ কথা ভেবেছেন—কীভাবে ইসলামের নবজাত চারাটিকে এমন হাতে সোপর্দ করা যায়, যারা একে সঠিকভাবে লালন ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে।

এই কারণেই তিনি তাঁর তাওহিদের আহ্বানের শুরু থেকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ ও ঐতিহাসিক মুহূর্তে—যেমন হাদিসে মানযিলাত, হাদিসে ইয়াওমুদ্দার, হাদিসে গাদীর ইত্যাদির মাধ্যমে—নিজের পরবর্তী নেতৃত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করে গেছেন।

এই বাণীগুলোর প্রতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তাকালে যে কোনো গবেষক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন যে, রাসূল ﷺ–এর সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ছিল—উম্মতের হিদায়াতের জন্য কুরআন ও তাঁর আহলুল বাইতের অনুসরণ নিশ্চিত করা। এই নীতিই পরিচিত হয়েছে “হাদিসে সাকালাইন নামে।

হাদিসে সাকালাইন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)

আহলুস সুন্নাহর অন্যতম নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ সহিহ মুসলিম–এ এই হাদিসটি নিম্নরূপে বর্ণিত হয়েছে:

حدثني زُهَيْرُ بن حَرْبٍ وَشُجَاعُ بن مَخْلَدٍ … أُذَكِّرُكُمُ اللَّهَ في أَهْلِ بَيْتِي

ইয়াযিদ ইবন হাইয়্যান বলেন—আমি, হুসাইন ইবন সাবরা ও উমর ইবন মুসলিম একসঙ্গে যায়েদ ইবন আরকামের কাছে গেলাম। হুসাইন তাঁকে বললেন: হে যায়েদ! আপনি তো অসংখ্য কল্যাণ লাভ করেছেন—রাসূলকে দেখেছেন, তাঁর হাদিস শুনেছেন, তাঁর সঙ্গে জিহাদ করেছেন। আমাদেরকে রাসূলের কোনো কথা শোনান।

যায়েদ বললেন: আমার বয়স হয়ে গেছে, অনেক কিছু ভুলে গেছি। যা বলি গ্রহণ করো, আর যা বলি না তার জন্য আমাকে বাধ্য কোরো না।

অতঃপর তিনি বললেন: একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি ‘খুম’ নামক স্থানে আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা করলেন, উপদেশ দিলেন এবং বললেন: হে মানুষ! জেনে রাখো, আমিও একজন মানুষ। অচিরেই আমার প্রতিপালকের দূত আমার কাছে আসবে, আর আমি তাঁর ডাকে সাড়া দেব। আমি তোমাদের মাঝে দুটি মূল্যবান বস্তু রেখে যাচ্ছি— প্রথমটি আল্লাহর কিতাব, যার মধ্যে রয়েছে হিদায়াত ও নূর; তোমরা একে দৃঢ়ভাবে ধারণ করো। আর দ্বিতীয়টি আমার আহলুল বাইত।
আমি তোমাদেরকে আমার আহলুল বাইতের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি—
আমি তোমাদেরকে আমার আহলুল বাইতের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি—
আমি তোমাদেরকে আমার আহলুল বাইতের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।”

(এই বাক্যটি তিনি তিনবার পুনরাবৃত্তি করেন)

হাদিসে সাকালাইন (মুসনাদে আহমদ ইবন হাম্বল)

আহলুস সুন্নাহর আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ মুসনাদে আহমদ–এ হাদিসটি সামান্য ভিন্ন ভাষায় এভাবে এসেছে:

«إني قد تركت فيكم الثقلين … كتاب الله … وعترتي أهل بيتي … ولن يفترقا حتى يردا علي الحوض»

অর্থ: আমি তোমাদের মাঝে দুটি মহামূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি—একটি অপরটির চেয়ে মহান। তা হলো আল্লাহর কিতাব, যা আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত প্রসারিত এক দৃঢ় রশি। আর দ্বিতীয়টি হলো আমার ইতরাত, অর্থাৎ আমার আহলুল বাইত। জেনে রেখো, এই দুটি কখনো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না—যতক্ষণ না তারা হাউজে কাউসারে আমার কাছে উপস্থিত হবে।

হাদিসটির গ্রহণযোগ্যতা ও তাৎপর্য

এই হাদিসটি শুধু সহিহ মুসলিম বা মুসনাদে আহমদেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং তিরমিযি ও হাকিম নিশাপুরী  -সহ বহু সুপ্রতিষ্ঠিত মুহাদ্দিস এটি একই অর্থে বর্ণনা করেছেন।

সনদের দিক থেকে

আহলুস সুন্নাহর সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য গ্রন্থগুলোতেই এই হাদিস বিদ্যমান—যা এর ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখে না।

দলিলাদির দিক থেকে

অর্থাৎ, কীভাবে এই হাদিস আহলুল বাইতের ইসমাতের ওপর প্রমাণ হিসেবে কাজ করে—সে দিক থেকে বিভিন্ন বিশ্লেষণ সম্ভব। বিশেষ করে দুটি দিক এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

১.আহলুল বাইতের প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণ,

২.তাঁদের অবিচ্ছেদ্যভাবে কুরআনের সমমর্যাদায় স্থাপন, যা ইসমত ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়।

১. ইতিহাসের প্রতিটি যুগে অন্তত একজন আহলুল বাইত (আ.)–এর উপস্থিতির অপরিহার্যতা

এই হাদিসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—কিয়ামত পর্যন্ত আহলুল বাইত (আ.)–এর বাণী ও কর্মের প্রামাণিকতা ও অনুসরণযোগ্যতা অটুট থাকা। কুরআন ও আহলুল বাইতের(আ.)মাঝে হাউজে কাউসার পর্যন্ত অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের যে ঘোষণা রাসূলুল্লাহ ﷺ দিয়েছেন, তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে তিনি উম্মতের জন্য একটি চিরস্থায়ী ও স্থায়ী দিকনির্দেশনামূলক কৌশল নির্ধারণ করে গেছেন।

এই বক্তব্য আরও বোঝায় যে, প্রতিটি যুগেই উম্মতের মধ্যে আহলুল বাইত(আ.)–এর মধ্য থেকে হেদায়াতপ্রাপ্ত পথপ্রদর্শক ও নেতা বিদ্যমান থাকবেন।

আহলুস সুন্নাহর বহু খ্যাতিমান আলেম এই দালালতকে স্বীকার করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, ইবন হাজার আসকালানি এ প্রসঙ্গে লিখেছেন:

এই হাদিস প্রমাণ করে যে, কিয়ামত পর্যন্ত কুরআনের পাশাপাশি আহলুল বাইতের মধ্যেও এমন ব্যক্তিত্ব থাকবেন, যাঁরা কুরআনের ন্যায় অনুসরণ ও অবলম্বনের উপযুক্ত।

এছাড়া হাফেজ সামহুদি বলেন:

হাদিসে সাকালাইন থেকে বোঝা যায় যে, প্রতিটি যুগেই আহলুল বাইতের মধ্য থেকে এমন একজন ব্যক্তি অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন, যাঁর অনুসরণ করা ওয়াজিব—যাতে হাদিসে বর্ণিত ‘তামাসসুক’ বা দৃঢ় অবলম্বনের নির্দেশ অর্থবহ হয়; ঠিক যেমন আল্লাহর কিতাব সর্বদা বিদ্যমান। এ কারণেই আহলুল বাইতকে পৃথিবীর জন্য নিরাপত্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে—যদি তাঁরা পৃথিবী থেকে উঠে যান, তবে পৃথিবীও ধ্বংস হয়ে যাবে।

এই একই অর্থ আল্লামা মানাভি–ও শারহে জামেউস সাগীর–এ উল্লেখ করেছেন।

শিয়া আলেমগণ সর্বসম্মতিক্রমে এই দালিলদিকে গ্রহণ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, আয়াতুল্লাহ নাসির মাকারিম শিরাজী লিখেছেন:

এই হাদিস সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, ইসলামের পুরো ইতিহাস জুড়েই আহলুল বাইত (আ.)–এর মধ্য থেকে সবসময় এমন ব্যক্তিরা বিদ্যমান থাকবেন, যাঁরা কুরআনের মতোই হেদায়াতের দীপ। সুতরাং আমাদের কর্তব্য হলো—প্রতিটি যুগে তাঁদের অনুসন্ধান করা এবং তাঁদের পরিচয় লাভ করা।

২. কুরআন থেকে অবিচ্ছেদ্য হওয়ার শর্ত হিসেবে আহলুল বাইতের (আ.) নিষ্পাপতা

এই হাদিস থেকে প্রাপ্ত আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—আহলুল বাইতের (আ.) কথাবার্তা ও কর্মের নিষ্পাপতা (ইসমাত)। কুরআন ও আহলুল বাইতকে পাশাপাশি স্থাপন করা এবং উভয়ের অনুসরণকে অপরিহার্য ঘোষণা করা স্পষ্টভাবেই তাঁদের ইসমতের প্রমাণ বহন করে।

কারণ, কুরআন হলো আল্লাহর নিষ্পাপ কিতাব। কোনো ধরনের গুনাহ বা পাপাচারে লিপ্ত হওয়া মানেই কুরআন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। সুতরাং আহলুল বাইতের কুরআনের সঙ্গে পূর্ণ সামঞ্জস্য ও অবিচ্ছেদ্যতা তাঁদের নিষ্পাপতারই নামান্তর।

এই প্রসঙ্গে আয়াতুল্লাহ মাকারিম শিরাজি লিখেছেন:

আহলুল বাইত(আ.)নিষ্পাপ। কারণ, একদিকে তাঁদের কুরআন থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়ার ঘোষণা এবং অন্যদিকে তাঁদের নিঃশর্ত অনুসরণের নির্দেশ—এই দু’টি বিষয়ই স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে তাঁরা ভুল, পাপ ও বিচ্যুতি থেকে মুক্ত। যদি তাঁদের মধ্যে গুনাহ বা ভুল থাকত, তবে তাঁরা কুরআন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন এবং তাঁদের অনুসরণ মুসলমানদের গোমরাহি থেকে রক্ষা করত না। অথচ হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে—তাঁদের অনুসরণ মানুষকে গোমরাহি থেকে নিরাপদ রাখে; আর এটাই তাঁদের ইসমতের সুস্পষ্ট প্রমাণ।

আহলুল বাইতের (আ.) সুনির্দিষ্ট পরিচয় নির্ধারণ

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে হাদিসে সাকালাইনের মাধ্যমে আহলুল বাইতের(আ.) ইসমতের প্রমাণ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।এখন কেবল প্রয়োজন—‘আহলুল বাইত’ বলতে ঠিক কাদের বোঝানো হয়েছে, তা নির্ধারণ করা।

এ ক্ষেত্রেও রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর বক্তব্যই আমাদের পথ দেখায়। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে—উমর ইবন খাত্তাব রাসূল ﷺ–কে জিজ্ঞেস করেছিলেন: আমরা কি সকল আহলুল বাইতের অনুসরণ করব?

রাসূল ﷺ উত্তরে বলেন: না; বরং আমার আহলুল বাইতের মধ্য থেকে আমার ওসিয়তপ্রাপ্ত উত্তরাধিকারীদের অনুসরণ করবে। তাঁদের প্রথমজন হলেন আমার ভাই, আমার মন্ত্রী, আমার উত্তরাধিকারীও উম্মতের মাঝে আমার খলিফা—এবং প্রতিটি মুমিনের অভিভাবক—আলী(আ.)।এরপর তাঁর পুত্র হাসান, তারপর তাঁর পুত্র হুসাইন, এরপর হুসাইনের বংশধর থেকে একের পর এক নয়জন…

বারো খলিফা সংক্রান্ত হাদিসসমূহ

এই হাদিস ছাড়াও আহলুস সুন্নাহর বহু প্রসিদ্ধ গ্রন্থে এমন অসংখ্য নববী হাদিস পাওয়া যায়, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর পর তাঁর উত্তরাধিকারী হবেন বারোজন খলিফা। গভীরভাবে অধ্যয়ন করলে প্রতীয়মান হয়—এই বারোজনই হলেন শিয়াদের বিশ্বাস অনুযায়ী বারোজন ইমাম।

উদাহরণস্বরূপ—

১. জুওয়াইনি–এর বর্ণনা

আহলুস সুন্নাহর আলেম জুওয়াইনি, ফারায়েদুস সামতাইন গ্রন্থে বর্ণনা করেন—রাসূল ﷺ হযরত আলী (আ.)–কে বলেন: আমি যা বলি তা লিখে রাখো…”
আলী (আ.) জিজ্ঞেস করলেন: “আমার অংশীদাররা কারা? রাসূল ﷺ বললেন:
তোমার সন্তানদের মধ্য থেকে ইমামগণ—যাঁদের বরকতেই আমার উম্মত বৃষ্টি লাভ করে। এঁদের মধ্যে এইজন”—(ইমাম হাসানের দিকে ইঙ্গিত করে)—“প্রথম, আর এরপর এইজন”—(ইমাম হুসাইনের দিকে ইঙ্গিত করে)—“এবং ইমামগণ হবেন তাঁর বংশধরদের মধ্য থেকে।

২. ইবন আব্বাস থেকে মুজাহিদের বর্ণনা

মুজাহিদ, ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন—একজন ইহুদি রাসূল ﷺ–এর কাছে এসে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং শেষে অনুরোধ করেন যেন তিনি তাঁর উত্তরাধিকারীদের নাম উল্লেখ করেন। তখন রাসূল ﷺ একে একে বারোজন ইমামের নাম উল্লেখ করেন।

এই ধরনের বর্ণনা আহলুস সুন্নাহর হাদিস গ্রন্থে এতই ব্যাপক যে এগুলো “বারোজন খলিফার হাদিস” নামে পরিচিত। সুন্নি আলেম কান্দুজি–র ভাষায়—

এই হাদিসগুলোকে সময়, শর্ত ও বাস্তবতার বিচারে বারোজন ইমাম ছাড়া অন্য কারও ওপর প্রযোজ্য করা সম্ভব নয়।

পাদটীকা

(১) আহলুল বাইত (আ.)–এর ইসমাত(নিষ্পাপতা) প্রমাণে এই মহিমান্বিত আয়াত থেকে গৃহীত বিস্তারিত যুক্তি এবং নবী ﷺ–এর স্ত্রীদের এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা জানতে দেখুন: আল-মিজান ফি তাফসিরিল কুরআন, আল্লামা মুহাম্মদ হুসাইন তাবাতাবায়ি; বাংলা অনুবাদ: মুহাম্মদ বাকের মুসাভি, প্রকাশনা: জামেয়া মুদাররেসিনে হাওযা ইলমিয়্যা কুম, কুম, ১৩৭৪ হিজরি শামসি, ৫ম সংস্করণ, খণ্ড ১৬, পৃষ্ঠা ৪৬৩–৪৬৯ ও ৪৭৪–৪৭৯; এছাড়া দেখুন: তাফসিরে নমুনা, নাসের মাকারিম শিরাজী, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়্যা, তেহরান, ১৩৭১ হিজরি শামসি, ১০ম সংস্করণ, খণ্ড ১৭, পৃষ্ঠা ২৯৭–৩০৩।

(২) সহিহ মুসলিম, আবুল হুসাইন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশাইরি আন-নিসাবুরি, তাহকিক: মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, দার ইহইয়াউত তুরাস আল-আরাবি, বৈরুত, ১৯৭২ খ্রি., ২য় সংস্করণ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৮৮৩ ও ১৮৭৪।

(৩) মুসনাদ আবি ইয়ালা, আবু ইয়ালা আল-মাওসিলি আত-তামিমি, আহমাদ ইবন আলি ইবন আল-মুথান্না, তাহকিক: আসাদ সালিম, দারুল মামুন, দামেস্ক, ১৪০৪ হিজরি ক্বমরি, ১ম সংস্করণ, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ৩৪৪।

(৪) আল-মু‘জাম আল-কাবির, আত-তাবরানি, আবুল কাসেম সুলাইমান ইবন আহমাদ ইবন আইয়ুব, তাহকিক: হামদি ইবন আবদুল মাজিদ আস-সালাফি, মাকতাবাতুয যাহরা, মসুল, ১৪০৪ হিজরি ক্বমরি, ২য় সংস্করণ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৫৩।

(৫) ইমাম-পরিচয় কুরআনে এবং সংশয়ের জবাব, আলি আসগর রিজওয়ানি, প্রকাশনা: মসজিদে মুকাদ্দাস জামকারান, কুম, ১৩৮৫ হিজরি শামসি, পৃষ্ঠা ৩৯২।

(৬) সূরা নিসা, আয়াত ৫৯:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ﴾ (হে মুমিনগণ! আল্লাহর আনুগত্য করো, রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্য থেকে উলুল আমরের [নবীর উত্তরাধিকারীদের] আনুগত্য করো।)

(৭) ইমাম-পরিচয়, সাইয়্যেদ মুহাম্মদ হুসাইনি তেহরানি, প্রকাশনা: নাশরে আল্লামা তাবাতাবায়ি, মাশহাদ, ১৪২৬ হিজরি ক্বমারি, ৩য় সংস্করণ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২২৪;
এছাড়া: ইমাম-পরিচয় কুরআনে এবং সংশয়ের জবাব, পূর্বোক্ত গ্রন্থ।

(৮) ইমাম-পরিচয় কুরআনে এবং সংশয়ের জবাব, পূর্বোক্ত।

(৯) সহিহ মুসলিম, আবুল হুসাইন আল-কুশাইরি আন-নিসাবুরি, মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ, তাহকিক: মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, দার ইহইয়াউত তুরাস আল-আরাবি, বৈরুত, সন-তারিখবিহীন, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৮৭৩।

(১০) মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল, আবু আব্দুল্লাহ আশ-শাইবানী, আহমাদ ইবন হাম্বল, মুআসসাসা কুরতুবা, মিসর, সন-তারিখবিহীন, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৬।

(১১) সুনান আত-তিরমিজি, মুহাম্মদ ইবন ঈসা আত-তিরমিজি, তাহকিক ও টীকা: আহমাদ মুহাম্মদ শাকির, মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, ইবরাহিম আতওয়া আওয়াদ, মাকতাবা ও মাতবাআ মুস্তাফা আল-বাবি আল-হালাবি, মিসর, ১৩৯৫ হিজরি ক্বমারি, ২য় সংস্করণ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৬৬৩।

(১২) আল-মুস্তাদরাক ‘আলাস সহিহাইন, আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকিম আন-নিসাবুরি, মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ, তাহকিক: মুস্তাফা আব্দুল কাদের আতা, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যা, বৈরুত, ১৪১১ হিজরি ক্বামারি, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১১৮।

(১৩) আস-সাওয়াইক আল-মুহরিকাহ ‘আলা আহলির রাফদ ওয়াদ্-দালাল ওয়াজ-জানদাকা, ইবন হাজার আল-হাইতামি, আহমাদ ইবন মুহাম্মদ, তাহকিক: আব্দুর রহমান ইবন আব্দুল্লাহ আত-তুর্কি ও কামিল মুহাম্মদ আল-খাররাত, মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত, ১৯৯৭ খ্রি., ১ম সংস্করণ, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৩৯।

(১৪) জাওয়াহিরুল ‘আকদাইন ফি ফাদলিশ শরাফাইন, আলি ইবন আব্দুল্লাহ আল-হাসান আস-সামহুদি, মাতবাআতুল ‘আনি, বাগদাদ, ১৪০৫ হিজরি ক্বামারি, ১ম সংস্করণ, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১১৯।

(১৫) ফাইযুল কাদির শরহে আল-জামি‘ আস-সাগির, আব্দুর রউফ আল-মুনাওয়ি, আল-মাকতাবাতুত তিজারিয়্যাতুল কুবরা, মিসর, ১৩৫৬ হিজরি ক্বমরি, ১ম সংস্করণ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৪।

(১৬) পয়গামে কুরআন, নাসের মাকারিম শিরাজি, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়্যা, তেহরান, ১৩৮৬ হিজরি শামসি, ৯ম সংস্করণ, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ৭৫–৭৬।

(১৭) পয়গামে কুরআন, পূর্বোক্ত গ্রন্থ।

(১৮) ফারায়েদুস সামতাইন, ইব্রাহিম ইবন মুহাম্মদ আল-হামুই আল-জুওয়াইনি, তাহকিক: মুহাম্মদ বাকের মাহমুদি, মুআসসাসাতুল মাহমুদি, বৈরুত, সন-তারিখবিহীন, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩১৭–৩১৮।

(১৯) ফারায়েদুস সামতাইন, পূর্বোক্ত, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২৫৯।

(২০) একই গ্রন্থ, পৃষ্ঠা ১৩৩, হাদিস নং ৪৩০ ও ৪৩১।

(২১) ইয়ানাবি‘উল মাওয়াদ্দাহ লি-যাওয়িল কুরবা, সালমান ইবন ইবরাহিম আল-কান্দুজি, তাহকিক: আলি ইবন জামাল আশরাফ আল-হুসাইনি, সংস্থা: সংগঠনে আওকাফ ও উমুরে খাইরিয়্যা, কোম, সন-তারিখবিহীন, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৯২।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button