যদি ইসলাম সত্যই সর্বজনীন ধর্ম হয়, তবে মানব সমাজের কিছু অংশ আজও কেন তার বার্তা শ্রবণ করেনি?
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ১ ডিসেম্বর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ইসলামের সর্বজনীনতা এই অর্থে নয় যে তার আলোকরশ্মি উদয়ের মুহূর্তেই পৃথিবীর প্রতিটি কোণে পৌঁছে যাবে; বরং যুগের সীমাবদ্ধতা, যোগাযোগের স্বল্পতা ও রাজশক্তির প্রতিবন্ধকতা ধর্মের বিস্তারে ধীরগতি এনেছে। তবুও ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—এই আলোকধারা ক্রমে সমগ্র মানবসভ্যতাকে স্পর্শ করে চলেছে।
ইসলামের “বিশ্বব্যাপকতা” মানে এই নয় যে আবির্ভাবের প্রথম দিনেই তার বাণী সমগ্র পৃথিবীতে সমানভাবে প্রতিধ্বনিত হবে। ধর্মের বিস্তার এক দীর্ঘ, সময়নির্ভর ও পরিশ্রমসাধ্য যাত্রা।
প্রশ্ন: যখন ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, তখন কেন নবুওতের যুগে—এমনকি আজকের গণমাধ্যম–সমৃদ্ধ জগতেও—সব মানুষের কানে ইসলামের আহ্বান পৌঁছায়নি? যেমন—তখনকার অজানা আমেরিকা মহাদেশের অধিবাসীরা তো ইসলামের কথা শুনতেই পারেনি!
উত্তর: ইসলামের সর্বজনীনতা বলতে বোঝানো হয় এর শিক্ষা সমগ্র মানবতার জন্য; কিন্তু তা একদিনে বা এক যুগে সর্বত্র পৌঁছে যাবে—এমন শর্ত নেই। নবী (সা.)–এর যুগে সংবাদ ও যোগাযোগের যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা বিস্তারের গতি স্বাভাবিকভাবেই মন্থর করেছিল।
বিভিন্ন রাজা–সম্রাটের উদ্দেশে প্রেরিত নবী–(সা.)–এর চিঠিগুলোও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। অধিকাংশ শাসকই ইসলামের বার্তাকে নিজেদের ক্ষমতার পরিপন্থী ভেবে তা গোপন রাখত, এমনকি গ্রহণকারীদের কঠোর শাস্তি দিত।
আজও বহু দূরবর্তী ভূখণ্ডে এমন মানুষ আছেন যারা ইসলামের নাম শোনেননি কিংবা সঠিক ব্যাখ্যা পাননি।
কুরআন বিস্ময়করভাবে ঘোষণা করেছে—অবশেষে মানবসমাজের বৃহৎ অংশ ইসলাম গ্রহণ করবে। চৌদ্দ শতকের ইতিহাস ও আধুনিক পরিসংখ্যান সাক্ষ্য দেয়—ইসলাম সদা–সময়ের তুলনায় অধিক গতিতে বিস্তার লাভ করছে; এমনকি বহু অমুসলিম গবেষকরাও ভবিষ্যদ্বাণী করছেন—বিশ্বের প্রধান জনগোষ্ঠী শীঘ্রই মুসলমানরাই হবে।
আপনি চাইলে অনুসন্ধানে “رشد دین” বা “Growth of religion” লিখে এ তথ্যের প্রমাণ পেতে পারেন।
এসব কি ইসলামের বিশ্বজনীনতার জন্য পর্যাপ্ত নিদর্শন নয়?
আর যাদের কাছে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা পৌঁছায়নি অথচ যারা নৈতিক জীবন যাপন করেছে, তারা শাস্তির আওতায় পড়বে না—ধর্মতত্ত্ব এ কথা স্পষ্ট উল্লেখ করে।



