পারমাণবিক অস্ত্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান, স্বচ্ছতার পক্ষে ইরান

মিডিয়া মিহির: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তার সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ইরান গঠনমূলক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় এবং পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। একই সঙ্গে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা দেওয়ার জন্য ইসরায়েলকে নিন্দা জানান।
বুধবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে পেজেশকিয়ান তার সরকারের মূল নীতি তুলে ধরে বলেন, “আমার নির্বাচনী প্রচারণা থেকেই আমরা দেশের অভ্যন্তরে জাতীয় ঐক্য জোরদার করা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছি।”
তিনি আরও বলেন, “ইরান সর্বদা সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমার সরকারের প্রথম দিন থেকেই জায়নিস্ট শাসনব্যবস্থা এ পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং এখনো সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পেজেশকিয়ান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্র দৃঢ়ভাবে ও বারবার ঘোষণা করেছে যে আমরা কখনো পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করিনি। আমরা স্বচ্ছভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, যাতে প্রমাণ করা যায় যে এসব অভিযোগ মিথ্যা। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী তারা, যারা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং পরমাণু সমঝোতা চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে একতরফাভাবে সরে গেছে।”
তিনি বিশ্বশক্তিগুলোর দ্বৈত মানসিকতা ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নীরবতার সমালোচনা করে বলেন, “ইরানের একটি ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়, অথচ ইসরায়েল প্রতিদিন সীমা লঙ্ঘন করলেও তারা চুপ থাকে। ইরান কি কখনো বিদেশে হত্যাকাণ্ড বা সন্ত্রাস চালিয়েছে? বরং আমরা নিজেরাই সন্ত্রাসবাদের অন্যতম বড় শিকার।”
অন্যদিকে, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইরানের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়াই বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানের সর্বোত্তম পথ।
কস্তা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তিনি উল্লেখ করেন যে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।



