মিডিয়া মিহির: মানবজীবনে পাপ ও গুনাহ এক অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। কখনো অজান্তে, কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষ ভুল করে বসে। কিন্তু সেই ভুলের পরিণতি শুধু পার্থিব নয়, আত্মিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গভীর। ইসলামী দর্শনে পাপকে শুধু একটি নৈতিক বিচ্যুতি নয়, বরং একধরনের আত্মিক ব্যাধি হিসেবে দেখা হয়। এই ব্যাধির চিকিৎসা কীভাবে সম্ভব—তা নিয়ে বহু মনীষী মত দিয়েছেন। তবে ইমাম আলী (আ.)-এর সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর বাণী এই বিষয়ে এক অনন্য দিকনির্দেশনা দেয়।
ইমাম আলী (আ.) বলেন:
امیرالمؤمنین امام علی علیهالسلام: الذُّنوبُ الدّاءُ، وَ الدَّواءُ الاِستِغفارُ، وَ الشِّفاءُ أن لا تَعودَ.
গুনাহ হলো ব্যাধি, তার ওষুধ হলো ইস্তেগফার, আর প্রকৃত আরোগ্য হলো পাপের পথে আর না ফেরা। ঘুরারুল হিকাম, হাদীস ১৮৯০
এই বাণীতে তিনটি স্তর রয়েছে:
১. গুনাহকে ব্যাধি বলা হয়েছে, যা আত্মাকে দুর্বল করে, আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
২. ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা হলো তার ওষুধ, যা অন্তরের ভার লাঘব করে, আল্লাহর করুণা লাভের পথ খুলে দেয়।
৩. আর প্রকৃত আরোগ্য হলো গুনাহ থেকে ফিরে আসা, অর্থাৎ শুধুমাত্র মুখে ক্ষমা চাওয়া নয়, বরং বাস্তব জীবনে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি না করা।
এই তিনটি ধাপই আত্মশুদ্ধির পথে একান্ত প্রয়োজনীয়।
উপসংহার
ইমাম আলী (আ.)-এর এই বাণী আমাদের শেখায় যে, পাপের পরিণতি থেকে মুক্তি শুধু অনুশোচনায় নয়, বরং পরিবর্তনে নিহিত। ইস্তেগফার হলো শুরু, কিন্তু প্রকৃত মুক্তি আসে যখন মানুষ নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তা পুনরায় না করে। এই শিক্ষা শুধু ধর্মীয় নয়, মানবিক ও নৈতিক উন্নতির জন্যও অপরিহার্য। তাই আমাদের উচিত, আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করা এবং আল্লাহর করুণা লাভের জন্য আন্তরিকভাবে তাঁর পথে ফিরে যাওয়া।



