কুরআনকুরআন শিক্ষাজীবনযাপনধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদ

পরিবারের সঙ্গে সুন্দর আচরণই প্রকৃত ঈমানের মানদণ্ড

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পরিবারের সঙ্গে সুন্দর আচরণই প্রকৃত ঈমানের মানদণ্ড

মিডিয়া মিহির: ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে অবস্থিত আহলে বাইতের (আ.) মহীয়শী নারী হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.)-এর পবিত্র হারামে আয়োজিত এক আধ্যাত্মিক মাহফিলে হুজ্জাতুল ইসলাম হেদায়েত বলেছেন, ঈমান ও আল্লাহর নৈকট্যের প্রকৃত মানদণ্ড হলো পরিবারের সঙ্গে মানুষের আচরণ। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে তার পরিবারের জন্য সর্বোত্তম।”

রবিউল আউয়ালের এই বরকতময় দিনগুলো উপলক্ষে বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এমন এক পূর্ণাঙ্গ আদর্শ, যার অসীম গুণাবলির কথা কোরআন স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। আমিরুল মুমিনিন ইমাম আলী (আ.)-ও নাহজুল বালাগাতে নবীজির (সা.) চরিত্র ও গুণাবলি বারবার বর্ণনা করেছেন। আজকের সমাজের অন্যতম প্রধান চাহিদা হলো ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নবীজী (সা.) এবং আহলে বাইতের (আ.) জীবনধারা বাস্তবায়ন করা।

তিনি পরিবারের গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলেন, রাসূলুল্লাহর (সা.) দৃষ্টিতে মানুষের প্রকৃত কর্মফল হলো তার পারিবারিক আচরণ। এ কারণেই তিনি ইরশাদ করেছেন: خَیْرُکُمْ خَیْرُکُمْ لِأَهْلِهِ “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার পরিবারের জন্য সর্বোত্তম।” তাই ঘরে ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও সহনশীলতাই ঈমান যাচাইয়ের প্রকৃত মানদণ্ড।

হুজ্জাতুল ইসলাম হেদায়েত

হুজ্জাতুল ইসলাম হেদায়েত বলেন, “স্ত্রীর সঙ্গে সহনশীলতা ও সুন্দর আচরণ বড় ইবাদতের সমতুল্য।” তিনি হাদিস উদ্ধৃত করে জানান, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “পুরুষ যদি ঘরে স্ত্রীর কাজে সাহায্য করে, তবে আল্লাহ তার নাম শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এমনকি স্ত্রীর হাতে এক গ্লাস পানি দেওয়ার সওয়াব এক বছরের তাহাজ্জুদ ও রোজার চেয়েও উত্তম।”

তিনি পরিবারবিরোধী সমসাময়িক ষড়যন্ত্র নিয়েও সতর্ক করেন। তাঁর মতে, পরিবারকে ধ্বংস করার জন্য শত্রুরা তিনটি ধাপে পরিকল্পনা করেছে—প্রথমত, পরিবার গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; দ্বিতীয়ত, গঠিত পরিবারকে দুর্বল করা; এবং তৃতীয়ত, সন্তান জন্মদানে নিরুৎসাহিত করে পারিবারিক ধারাবাহিকতা নষ্ট করা। অথচ রাসূলুল্লাহ (সা.) বিবাহকে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং মুসলিম সমাজে সন্তান জন্মদানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

শেষে তিনি বলেন, আহলে বাইত (আ.) তাঁদের পারিবারিক জীবনকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের সমাজকেও পরিবারকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রধান দুর্গ হিসেবে শক্তিশালী করতে হবে। ঈমানের মানদণ্ড কেবল ব্যক্তিগত ইবাদতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং পরিবার—স্ত্রী, সন্তান ও পিতামাতার সঙ্গে আচরণই প্রকৃত ঈমানের প্রতিফলন।

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button