নারীর প্রকৃত মর্যাদার সন্ধানে: একমাত্র ধর্মের আলোকিত দৃষ্টিভঙ্গি
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ইসলামের আগের আরব সমাজে নারীর সামাজিক অবস্থান ছিল অমিশ্র: একদিকে প্রাচীন সভ্য ও একদিকে বর্বর সমাজের প্রভাব দেখা যেত। নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাধীন ও অধিকারহীন ছিল, কিন্তু কিছু অভিজাত কন্যার বিয়ে বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। ইসলামের আগমনের আগে নারীর জীবন ও মর্যাদা পুরুষের আধিপত্যের শিকার। আল্লামা তাবাতাবাই (রহ.)–এর তাফসির আল-মিজান এই ইতিহাস ও নারীর অবস্থার বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
প্রাচীন আরব সমাজে নারীর সামাজিক অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি
প্রাচীন আরব সমাজে নারীর মর্যাদা ছিল একটি সংকর প্রভাবের ফল—অর্ধেক সভ্য সমাজের রীতি ও অর্ধেক বর্বরতার প্রভাব।
১. অধিকাংশ নারী স্বাধীন বা সামাজিক অধিকারহীন ছিল।
২. কিছু অভিজাত কন্যা বিবাহের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা লাভ করত।
৩. নারীর অবমাননা এবং শোষণ ছিল পুরুষের আধিপত্যের ফল, সত্যিকার শ্রদ্ধা বা মর্যাদার অভাব।
মানব সমাজের নারীর প্রতি প্রাচীন মানসিকতা
১. শারীরিক ও সামাজিক দুর্বলতা:মানুষ দুইভাবে নারীর চরিত্র নিয়ে চিন্তা করত:
– এক, নারীকেই অবচেতন প্রাণীর স্তরে ধরা হতো।
– দুই, নারীকে দুর্বল ও নীচ মানুষ মনে করা হতো, যিনি মুক্ত হলে পুরুষদের জন্য বিপদ তৈরি করবে।
২. নারীর সামাজিক অবস্থান:
– কিছু সমাজে নারীকে সমাজের সদস্যই মনে করা হতো না।
– অন্য সমাজে নারীকে বন্দি বা দাসের মতো ধরা হতো, যার শ্রম সমাজের জন্য ব্যবহৃত হতো।
৩. অধিকারহীনতা:
– নারীর অধিকাংশ অধিকার অব্যাহতভাবে পুরুষদের নিয়ন্ত্রণে থাকত।
– তার সীমিত সুবিধাগুলোও মূলত পুরুষের স্বার্থের জন্য প্রযোজ্য।
৪. শক্তিশালী ও দুর্বল সম্পর্ক:
– পুরুষদের নারীর প্রতি আচরণ নির্ভর করত শক্তির আধিপত্যের উপর।
– ব্যবহার এবং শোষণ ছিল মূল নীতি, যা অসভ্য সমাজের বৈশিষ্ট্য।
সভ্য সমাজগুলোও মনে করত নারী দুর্বল ও বিপজ্জনক, যার স্বাধীনতা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ইসলামের প্রভাব
ইসলামই প্রথম এমন একটি দর্শন প্রবর্তন করেছিল যা:
- নারীর প্রকৃত মর্যাদা ও সত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
- পুরাতন সমাজের নারীর প্রতি বিদ্যমান ভ্রান্ত ধারণা ও অবমাননামূলক আচরণ বাতিল করে।
- নারীকে তাঁর প্রকৃত সত্তার ভিত্তিতে সমাজে উপস্থাপন করে, যা মানবজাতির ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি।
ইসলাম নারীর মূল্যবোধ, অধিকার ও মর্যাদাকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল যা আগে পৃথিবীর কোনো সভ্যতা বা ধর্ম করেছিল না।
সূত্র: তাফসিরে আল-মিজান, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪০৬।



