কখন একাকীত্ব ও নির্জনতা গ্রহণযোগ্য বা প্রশংসনীয় ?
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ইসলামিক আয়াত ও হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে, মানব জীবন সামাজিকভাবে পরিচালিত হওয়া একটি মূল নীতি, আর একাকীত্ব বা নির্জনতা শুধুমাত্র বিশেষ শর্তে ও ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য। কাহফের সাহাবা বা হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর উদাহরণ দেখায়, যে সময়ে জীবন বিপন্ন বা সমাজ দুষ্টাচারে নিমগ্ন ছিল, তখন পাহাড় বা গুহায় আশ্রয় নেওয়া ও নির্জনতা গ্রহণ প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল।
ইসলামে সামাজিক জীবনকে সর্বজনীন নীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু ব্যক্তিকে একাকী থাকার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। যেমন: যারা খুবই দুর্বল, সামাজিক অনিষ্ট ও দুষ্টাচারের প্রভাবে সহজেই প্রভাবিত হয়। চিকিৎসা বা সামাজিক দিক থেকে এমন ব্যক্তিকে পরামর্শ দেওয়া হয় কম সময় সামাজিক সমাগমে থাকুন, যেমন দূষিত পরিবেশে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে একাকীত্ব কেবল দূরত্ব বা শারীরিক বিচ্ছিন্নতার জন্য নয়, বরং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্যও প্রযোজ্য। রাতের শেষ সময় বা নির্দিষ্ট সময়ে মানুষ প্রভুর সঙ্গে গোপনে প্রার্থনা ও মিলন করতে পারে।
কখনও কখনও, যারা জেদপূর্ণভাবে দুষ্টাচারের পথে চলেন, তাদের থেকে অবহেলা বা দূরে থাকা দুষ্টাচারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিরোধের উপায় হিসেবে কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, দূরে থাকা আলেম বা সাধকের কারণে মানুষ তাদের আচরণ সংশোধন করতে বাধ্য হয়।
এই সব ঘটনা দেখায় যে, একাকীত্ব এবং সমাজবিচ্ছিন্নতা কখনওই সর্বজনীন নীতি নয়, বরং এটি বিশেষ পরিস্থিতি ও ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য।
সূত্র: আখলাকুল কুরআন”, লেখক: নাসের মাকারেম শিরাজী, প্রস্তুত ও সম্পাদনা করেছেন: একদল আলেম শিক্ষাবিদ, মাদ্রাসা আল-ইমাম আলী বিন আবি তালেব (আ.), কোম, ১৩৭৭ হিজরী শামের প্রথম সংস্করণ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৫৯।



