ইরান অবিচ্ছিন্নভাবে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করছে: সেনাপ্রধান
রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
মিডিয়া মিহির: ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি বলেছেন, দেশটি নিরবচ্ছিন্ন ও দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। তিনি জানান, সশস্ত্র বাহিনী কৌশলগত শক্তি উন্নয়নে একটি মুহূর্তও নষ্ট করেনি। রবিবার তেহরানের সেনাবাহিনী সদরদপ্তরে ইরানের পার্লামেন্টের কনস্ট্রাকশন কমিশনের সদস্যদের সাথে বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেজর জেনারেল হাতামি বলেন, “জাতীয় শক্তির বহু উৎস রয়েছে, তবে প্রতিরক্ষা শক্তির মূল উপাদান হলো সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী। আমরা এই খাতে কোনো সময় অপচয় করিনি; বরং ধারাবাহিকভাবে শক্তিবৃদ্ধির জন্য কাজ করছি।”
১২ দিনের যুদ্ধ: অভিজ্ঞতা ও প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী
ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ প্রসঙ্গে হাতামি বলেন, দেশের নেতৃত্ব, সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা এবং জনগণের ঐক্য—এই তিনটি উপাদান শত্রুকে যুদ্ধবিরতির অনুরোধে বাধ্য করেছিল। তিনি জানান, যুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে সামরিক প্রস্তুতির মান আরও উন্নত করা হয়েছে।
অবকাঠামো বিনিয়োগে সেনাবাহিনীর আহ্বান
সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ও ডেপুটি কোঅর্ডিনেটর রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুল্লাহ সাইয়ারি সামরিক স্থাপনা, অবকাঠামো এবং ভূমি-সম্পদের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, প্রকৌশল খাতে বাজেট বৃদ্ধি করলে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা সরাসরি শক্তিশালী হবে। এ জন্য তিনি পার্লামেন্টের আরও সহায়তা কামনা করেন।
ইসরায়েলের বিনা উসকানিতে হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা
১৩ জুন ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র–ইরান পরমাণু আলোচনা চলমান অবস্থায়, কোনো উসকানি ছাড়াই ইরানে হামলা চালায়।
এই আগ্রাসন ১২ দিনের যুদ্ধে রূপ নেয়, যেখানে ১,০৬৪ জন নিহত হন—যাদের মধ্যে সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিকও ছিলেন। যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করে।
জবাবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী অধিকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েলের কৌশলগত স্থাপনা এবং কাতারের আল-উদেইদ মার্কিন বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়— যা পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম মার্কিন ঘাঁটি।
ইরানের সফল পাল্টা অভিযানের ফলে ২৪ জুন ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে হামলা বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়।
আরাকচি: পুনরায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হলে জবাব আরও কঠোর হবে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রবিবার বলেন, জুনের যুদ্ধের পর ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশ এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি প্রস্তুত।

তিনি বলেন, “যদি একই ধরনের যুদ্ধ আবারও চাপিয়ে দেওয়া হয়, আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে। এই প্রস্তুতিই ভবিষ্যতের সংঘাত প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপাদান।”
তিনি আরও বলেন, চার দশকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানের মনোবল কখনো ভেঙে পড়েনি এবং দেশের সামর্থ্য সীমিত করা যায়নি।



