বিশ্বধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদ

ইরানের সুন্নি আলেম: শত্রুর ফিতনা ও বিভেদের মোকাবিলা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মিডিয়া মিহির: ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী সানান্দাজ শহরের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের জুমার ইমাম মামোস্তা মোহাম্মদ আমিন রাস্তি মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামি সমাজে শত্রুর ষড়যন্ত্রমূলক ফিতনা ও বিভেদ মোকাবিলা করা কেবল আলেম-ওলামাদের দায়িত্ব নয়; বরং প্রতিটি মুসলমানের ওপরই এ দায়িত্ব বর্তায়।

তিনি বলেন, “আমাদের অসতর্ক বা অযথা কথাবার্তা যেন কখনো শত্রুর হাতে বিভেদ সৃষ্টির অস্ত্র হয়ে না ওঠে।”

ঐক্য ভাঙাই শত্রুর প্রধান লক্ষ্য

মিলাদুন্নবী (সা.) ও ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে হাওযা নিউজ এজেন্সি’র সাথে আলাপকালে মামোস্তা রাস্তি বলেন, ভ্রান্ত প্রচারণামূলক মিডিয়ার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ভেঙে ফেলা এবং ফিতনা সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, “শত্রুরা নানা কৌশল ও অপপ্রচারের মাধ্যমে ইসলামের ভেতরে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে।”

জাতীয় ঐক্য দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য আজ ইরানের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই আলেম ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল মুসলমানের উচিত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে বুঝে বুদ্ধিমত্তা ও বাসিরাত (দূরদৃষ্টি) দিয়ে শত্রুর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা। “আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে ইসলামি বিশ্বে কোনো ফিতনা বাস্তবায়িত না হতে পারে,” যোগ করেন তিনি।

জায়োনিস্ট ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার আহ্বান

শত্রুর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রসঙ্গ টেনে মামোস্তা রাস্তি বলেন, শত্রুরা সবসময় মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে স্থায়ী বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করে, যাতে প্রতিরোধ আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিটি অবস্থান, কথা ও কাজে প্রজ্ঞা অপরিহার্য। বিশেষ করে জায়নিস্ট শাসনের ষড়যন্ত্রকে আমাদের ঐক্য ও সচেতনতার মাধ্যমেই ব্যর্থ করতে হবে।”

আরবাইনে হোসাইনি’ ঐক্যের প্রতীক

তিনি আরও বলেন, “এ বছরও শত্রুর ভ্রান্ত প্রচারণা সত্ত্বেও ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আরবাইন মিছিলে মিলিয়ন মুসলমানের অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছে যে, শিয়া ও সুন্নি নির্বিশেষে মুসলমানরা রাসূল (সা.) ও আহলে বাইতের প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করে।”

ভিন্নমত বিভেদের কারণ নয়

সানান্দাজের ইফতা ও রুহানিয়াত পরিষদের সদস্য মামোস্তা রাস্তি বলেন, “ইসলামি মাযহাবগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক। তবে এসব ভিন্নমত কোনোভাবেই ভ্রাতৃত্ব ভাঙার কারণ নয়; বরং এগুলো ইসলামকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। তাই মতভেদকে হুমকি নয়, বরং ইসলামি উত্থানের সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে।”

সর্বোচ্চ নেতার দিকনির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান

ইসলামি ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ নেতা সর্বদা ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তাঁর কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে যে, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি বিভেদ, আর সবচেয়ে বড় শক্তি ঐক্য। এজন্যই তিনি মাযহাবগুলোর মধ্যে নৈকট্যের ওপর জোর দিয়েছেন। আমরাও মুসলমান হিসেবে ও তাঁর নেতৃত্বের অনুসারী হিসেবে তাঁর দিকনির্দেশনা মেনে চলব, যাতে শত্রু কখনো মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সারিবদ্ধতা ভাঙতে না পারে।”

 

আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button