হাদিস

আহলুল বাইত (আ.)-এর ৪০ হাদিস

আহলুল বাইত (আ.)-এর ৪০ হাদিস

(1) ইমাম জাওয়াদ (আ.) বলেছেন,

”مَنْ زَارَ قَبْرَ أَبِی بِطُوسَ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَ مَا تَأَخَّر.”

”যে কেউ তুস শহরে (মাশহাদ) অবস্থিত আমার পিতার মাজার জিয়ারত করবে, আল্লাহ্ তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী জীবনের গোনাহ্ ক্ষমা করে দিবেন!”

ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড- ১৪, পৃষ্ঠা- ৫৫০

 

(2) মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,

قال رسول الله (ص): يا فاطمة! كل عين باكية يوم القيامة الا عين بكت على مصاب الحسين فانها ضاحكة مستبشرة بنعيم الجنة.

হে ফাতেমা! কিয়ামত দিবসে প্রতিটি চোখ-ই ক্রন্দনরত থাকবে। শুধুমাত্র ওই চোখ হাস্যোজ্জ্বল থাকবে ও জান্নাতের সুসংবাদ পাবে, যে চোখ ইমাম হোসাইনের শোক ও মুসিবতে কেঁদেছে ও অশ্রুসিক্ত হয়েছে।

 

(৩) ইমাম হুসাইন (আ.)বলেছেন,

إنَّ شيعَتَنا مَنْ سَلِمَتْ قُلوبُهُمْ مِنْ كُلِّ غِشٍّ وَغِلٍّ وَدَغَلٍ

নি:সন্দেহে আমাদের শিয়ারা অর্থাৎ অনুসারীরা হচ্ছে তারা যাদের অন্তর ( চিন্তা ভাবনা ) সমূহ সব ধরনের ভেজাল দেয়া (ও জাল করা ), শত্রুতা পোষণ (বিদ্বেষ ও খিয়ানত) এবং ধূর্তামি ও ছলচাতুরী থেকে পাক পবিত্র ও মুক্ত থাকে ।

বিহারুল আনওয়ার, খ: ৬৮, পৃ: ১৫৬

 

(৪) ইমাম মুহাম্মাদ বাকের (আ.) বলেছেন,

لو يَعلَمُ النَّاسُ، مَا فِی زِيَارَةِ قَبرِ الحُسَينِ مِنَ الفَضلِ، لَمَاتُوا شَوقاً.

জনগণ যদি ইমাম হুসাইনের (আঃ) মাযার মুবারক যিয়ারত করার ফজিলত সম্পর্কে জানত তাহলে তারা ঔৎসুক্য ও উদ্দীপনার কারণে (অর্থাৎ আনন্দে আত্মহারা হয়ে) মারাই যেত । »

তথ্যসূত্র: সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা-৩১৯

 

(৫) ইমাম হাসান (আ) বলেন,

أنا الضَّامِنُ لِمَن لَم يَهجُسْ في قلبهِ إلاّ الرّضا أن يَدعُوَ اللّه َ فَيُستَجابَ لَهُ .

যার অন্তরে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত আর কিছুই নেই সে যদি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে তাহলে তার প্রার্থনা ( মহান আল্লাহর কাছে )  কবূল ও গৃহীত হ‌ওয়ার নিশ্চয়তা ( যামানত) আমি প্রদান করছি ।

 

(৬) রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

لا إیمانَ لِمَن لا أمانةَ لَهُ

যে ব্যক্তির বিশ্বস্ততা ও আমানতদারি নেই  (অর্থাৎ যে ব্যক্তি বিশ্বস্ত ও আমানতদার নয়) তার ঈমান নেই।

আর – রাওয়ান্দী সংকলিত আন – নাওয়াদির , পৃ : ৯১ , হাদীস নং : ২৭ ; মহানবীর ( সা ) প্রজ্ঞা ও জ্ঞানগর্ভমূলক বাণী ও হাদীস সমূহের সংকলন , খ : ৮ , পৃ : ১০২ ।

 

(৭) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

أکیسُ الکیسِینَ مَن حاسَبَ نَفْسَهُ وعَمِلَ لِما بَعدَ المَوتِ.

সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি হচ্ছে সেই যে নিজের ( কর্মকাণ্ডের ) সুক্ষ্ম হিসাব নিকাশ ও বিচার বিশ্লেষণ ( মুহাসাবা) করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য ( ভালো ) আমল ( কাজ ) করে ।

বিহারুল আনওয়ার, খ : ৭০ , পৃ : ৬৯ , হাদীস নং : ১৬৩২৪ ; মহানবীর (সা) প্রজ্ঞা ও জ্ঞানগর্ভমূলক বাণী ও হাদীস সমূহের সংকলন , খ : ৮ , হাদীস নং : ১১৬ ;

 

(৮) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

ما مِن صَدَقةٍ أفضلَ مِن قَولِ الحَقِّ

সত্য বলার চেয়ে আর কোন উত্তম দান ও সদাকা নেই।

কানযুল উম্মাল , খ: ৬ , পৃ: ৪১৫ , হাদীস নং: ১৬ ; মহানবীর (সা) প্রজ্ঞা ও জ্ঞানগর্ভমূলক বাণী ও হাদীস সমূহের সংকলন, খ: ৮, হাদীস নং: ২৪৪

 

(৯) ইমাম আলী (আ.) বলেছেন,

ذا مَدَحتَ فاختَصِرْ ، إذا ذَمَمتَ فاقتَصِرْ

যখন তুমি কারো প্রশংসা করবে তখন তা সংক্ষিপ্ত করবে (  দীর্ঘ ক্ষণ ও বেশি প্রশংসা করা উচিত নয় ) এবং যখন কাউকে তিরস্কার করবে তখন তা সংক্ষিপ্ত করবে ( দীর্ঘ ক্ষণ ও বেশি তিরস্কার করা থেকে বিরত থাকা উচিত )।

( গুরারুল হিকাম্ : ৩৯৮৩ ও ৩৯৮৪ )

 

(১০) ইমাম আলী আ. বলেছেন,

الجَلسَةُ فِي المَسجِدِ خَيرٌ لي مِنَ الجَلسَةِ فِي الجَنَّةِ ؛ فَإِنَّ الجَنَّةَ فيها رِضا نَفسي وَالجامِعَ فيهِ رِضا رَبّي

মসজিদে বসে থাকা আমার কাছে বেহেশতে বসে থাকার চেয়ে উত্তম । কারণ, বেহেশতে আমার সন্তুষ্টি থাকবে এবং মসজিদে আমার প্রভুর সন্তুষ্টি বিদ্যমান ।

( ইরশাদুল কুলূব, পৃ: ২১৮; উদ্দাতুদ দায়ী, পৃ: ১৯৪, বিহারুল আনওয়ার, খ: ৮৩, পৃ: ৩৬২, হাদীস নং: ১৬ )

 

(১১) মহানবী (সা.) বলেন,

«مَنْ أَخَذَ لِلْمَظْلومِ مِنَ الظّالِمِ، كانَ مَعىَ فِى الْجَنَّةِ تَصاحُبا.»

যে ব্যক্তি যালিমের কাছ থেকে মযলূমের ন্যায্য হক ( অধিকার) আদায় করে সে বেহেশতে আমার সঙ্গী হিসেবে আমার সাথে থাকবে।

বিহারুল আনওয়ার, খ: ৭৫, পৃ: ৩৫৯, হাদীস নং ৭৪

 

(১২) ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেন,

فمن عرف فاطمة حق معرفتها فقد ادرک لیلة القدر

যে ব্যক্তি হযরত ফাতিমাকে ( আ ) সঠিক ও যথার্থভাবে চিনবে সে অবশ্যই শবে কদর বুঝতে , চিনতে ও শনাক্ত করতে সক্ষম হবে

 

(১৩) মহানবী (সা.) বলেছেন ,

من احب فاطمه ابنتی فهو فی الجنه معی ومن ابغضها فهو فی النار

যে ব্যক্তি আমার মেয়ে ফাতিমাকে ( আ .) ভালোবাসে বেহেশতে সে  আমার সাথে থাকবে আর যে ব্যক্তি  তাঁকে ঘৃণা করবে সে জাহান্নামে থাকবে ।

 

(১৪) এক ব্যক্তি স্বীয় কন্যা সন্তানের নাম ফাতিমা রাখলে ইমাম সাদিক্ব (আ) তাকে বললেন,

اذا سمیتها فاطمه فلا تسبها و لاتلعنها ولاتضربها

যখন তুমি তোমার মেয়ে সন্তানের নাম ফাতিমা রেখেছ তখন তুমি তাকে গালি ও অভিশাপ দিতে পারবে না এবং তাকে প্রহার করতে পারবে না।

প্রাগুক্ত, পৃ: ৪৮

 

(১৫) মহানবী (সা) বলেন,

ان فاطمه بضعة منی و هی نور عینی وثمرة فؤادی

নিশ্চয়ই ফাতিমা আমার ( দেহ , সত্ত্বা ও অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য) অংশ । সে আমার নয়নের দ্যুতি  এবং আমার অন্ত:করণ ও হৃদয়ের ফল ।

আমালী , শেখ সাদূক্ব , পৃ : ৪৮৬

 

(১৬) ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেন,

… فاطمه سیدة نساء العالمین من الاولین والاخرین؛ (16) فاطمه علیها السلام سرور زنان جهانیان از اولین تا آخرین است .»

হযরত ফাতিমা (আ.) বিশ্বের সকল পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রজন্মের নারীদের নেত্রী।

সূত্র : মা’আনিল্ আখবার, পৃ: ১০৭

 

(১৭) মহানবী (সা.)বলেন,

ان الله لیغضب لغضب فاطمه ویرضی لرضاها؛

নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ফাতিমা (আ.)-এর ক্রোধে ক্রোধান্বিত এবং তাঁর সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট হন।

সূত্র : শেখ মুফীদ , আল – আমালী , পৃ : ৯৪

 

(১৮) মহানবী (সা.) বলেন,

ملعون ملعون من یظلم بعدی فاطمه ابنتی ویغصبها حقها ویقتلها

অভিশপ্ত অভিশপ্ত হচ্ছে সেই যে আমার (মৃত্যুর) পরে আমার মেয়ে ফাতিমার ওপর জুলুম করবে, তাঁর ন্যায্য হক (অধিকার) ছিনিয়ে নেবে এবং তাঁকে হত্যা করবে ।

সূত্র : প্রাগুক্ত, খ: ৭৩, পৃ: ৩৫৪

 

(১৯) বিহারুল আনওয়ার গ্রন্থে মিসবাহুল আনওয়ার গ্রন্থ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে ইমাম আলী (আ) বলেন:

مَنْ صَلَّیٰ عَلَیْکِ غَفَرَ اللّٰهُ لَهُ وَ أَلْحَقَهُ بِيْ حَیْثُ کُنْتُ مِنَ الْجَنَّةِ .

হযরত ফাতিমা (আ.) বর্ণনা করেছেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে (ফাতিমা জাহরা) বলেছেন: যে ব্যক্তি তোমার (ফাতিমা জাহারা) ওপর দরূদ পাঠ করবে মহান আল্লাহ তার গুনাহ খাতা মাফ করে দেবেন এবং জান্নাতের যে স্থানে আমি থাকব তাকে সেখানে আমার সাথে মিলিত করবেন।

 

শেখ আব্বাস কোম্মী প্রণীত নেগহী বে যেন্দেগনী – এ চাহরদাহ্ মাসূম (আ.), পৃ: ৭৭

 

(২০) হযরত ফাতিমা (আ) বলেন,

جَعَلَ اللّٰهُ طَاعَتَنَا نِظَامَاً لِلْمِلَّةِ وَ إِمَامَتَنَا أَمَانَاً مِنَ الْفُرْقَةِ .

মহান আল্লাহ আমাদের (মহানবীর-সা-আহলুল বাইত-আ-) আনুগত্যকে (ইসলামী সমাজের) দ্বীন (ধর্ম ) রক্ষাকারী তন্ত্র ও ব্যবস্থা স্বরূপ স্থাপন এবং আমাদের ইমামত ও নেতৃত্বকে বিভেদ ও অনৈক্য থেকে রক্ষাকবচ ও নিরাপত্তা স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন।

শেখ আব্বাস কোম্মী প্রণীত নেগহী বে যেন্দেগনী চাহরদাহ মাসূম, পৃ: ৭৮

 

(২১) আমীরুল মু’মিনীন ইমাম আলী (আ),

مَنِ اشتَغَلَ بِالفُضولِ، فاتَهُ مِن مُهِمِّهِ المَأمولُ؛

যে ব্যক্তি বৃথা ও ফালতু (গুরুত্বহীন) বিষয় সমূহে মশগুল হয়  তার কাঙ্খিত (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় তার থেকে হারিয়ে যায় (সে তার কাঙ্খিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আর মশগুল হতে পারে না)।

গুরারুল হিকাম, হাদীস: ৮৬৩৩

 

(২২) হযরত ফাতিমা যাহরা (আ.) বলেন,

এ দুনিয়ার তিনটা জিনিস বা বিষয় আমার কাছে পছন্দনীয়:

১. পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, ২. রাসূলুল্লাহর (সা.) মুখমণ্ডলের দিকে তাকানো এবং (3)অভাবগ্রস্ত ও মুখাপেক্ষীদেরকে আল্লাহর রাহে সাহায্য করা।

নাহজুল হায়াত, হাদীস নং ১৬৪

 

(২৩) মহানবী (সা.) বলেছেন,

اَوَّلُ شخصٍ تدْخُلُ الجنةَ فاطمةُ

সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে সে ফাতিমা (আ.) ।

সূত্র: বিহারুল আনওয়ার,  খ: ৪৩, পৃ: ৪৪

 

(২৪) ইমাম আবু আব্দিল্লাহ (আ.) বলেন:

قال ابو عبدالله – علیه السّلام – : … اتدری ایَّ شیءٍ تفسیرُ فاطمةَ قلت: اخبرنی یا سیدی قال فُطِمَتْ مِنْ الشَّرِ.

“হযরত ফাতিমার (আ.) নামের অর্থ ও তাৎপর্যের ব্যাখ্যা কী? “(রাবী বলেন:) আমি বললাম: হে আমার নেতা! আপনি আমাকে তা জানান। “তখন তিনি বললেন: তিনি (ফাতিমা) সকল মন্দ ও অকল্যাণ থেকে পৃথক, মুক্ত ও দূরে (রয়েছেন)।”

(দ্র: বিহারুল আনওয়ার, খ: ৪৩, পৃ: ১০)

 

(২৫) মহানবী (সা) বলেন,

«لِكُلِّ شَيءٍ طَريقٌ و طَريقُ الجَنَّةِ العِلمُ.»

প্রতিটি জিনিস অর্জনের (সুনির্দিষ্ট) পথ ও উপায় আছে; আর বেহেশতে যাওয়ার পথ হচ্ছে জ্ঞান ।

কানযুল উম্মাল, হাদীস নং ২৮৮০৩

 

(২৬) ইমাম জাওয়াদ (আ.):

منْ لَمْ یَعْرِفِ الْمَوارِدَ أعْیَتْهُ الْمَصادِرُ.

যে ব্যক্তি (তার নিজের) অবস্থান ও মর্যাদার সাথে পরিচিত নয় ঘটনা প্রবাহ তাকে ধরাশায়ী,  অপদস্থ ও বিধ্বস্ত করে দেবে।

সূত্র: বিহারুল আনওয়ার, খ: ৬৮, পৃ: ৩৪০

 

(২৭) হযরত ফাতিমা যাহরা (আ.) বলেছেন,

خَيرٌ لِلنِّساءِ أن لايَرَينَ الرِّجالَ و لايَراهُنَّ الرِّجالُ

মহিলাদের জন্য উত্তম হচ্ছে যে তারা যেন (বিনা প্রয়োজনে) নামাহরাম পুরুষকে না দেখে এবং নামাহরাম পুরুষরাও যেন (বিনা প্রয়োজনে) তাদেরকে না দেখে।

সূত্র: বিহারুল আনওয়ার, খ: ১০৪, পৃ: ৩৬

 

(২৮) হযরত আমীরুল মু’মিনীন আলী (আ.) বলেছেন,

اِنَّمـَا الْبـَصـیـرُ، مـَنْ سـَمـِعَ فـَتـَفـَكَّرَ وَ نـَظـَرَ فـَابـْصـَرَ وَ انْتَفَعَ بِالْعِبَرِ؛ ثُمَّ سَلَكَ جَدَداً واضِحاً.»

নিশ্চয়ই বিচক্ষণ ও অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে শ্রবণ করে অত:পর ভাবে ও চিন্তা করে,  দেখে অত:পর বিচক্ষণতা অবলম্বন করে, হিতোপদেশ ও (পার্থিব জীবন থেকে লব্ধ) বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হয়, অত:পর সে আলোক উজ্জ্বল (সঠিক) পথে চলে ।

সূত্র: নাহজুল বালাগাহ, খুতবা ১৫২,  পৃ: ৪৭৩-৪৭৪

 

(২৯) ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেন,

যে ব্যক্তি চায় যে সে (পরকালে বেহেশতে) হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.),  হযরত আলী (আ.) ও হযরত ফাতিমা (আ.) -এর  প্রতিবেশী হতে সে যেন হুসাইন ইবনে আলীর (আলাইহিমাস্ সাল্লাম) যিয়ারত ত্যাগ না করে।

সূত্র: কামিলুয যিয়ারাত্,  অধ্যায় ৫২, হাদীস নং ১

 

(৩০) ইমাম হাদী (আ.) বলেছেন,

اَلدُّنْیَا سُوْقٌ رَبِحَ فِیْهَا قَوْمٌ وَ خَسِرَ آخَرُوْنَ

দুনিয়া (এ পার্থিব জগৎ হচ্ছে) বাজার সম যেখানে এক দল মানুষ মুনাফা অর্জন করে ও লাভবান হয় এবং অপর একদল হয় ক্ষতিগ্রস্ত।

(দ্র: বিহারুল আনওয়ার, খ: ৭৫, পৃ:৩৬৬)

 

(৩১) ইমাম হাদী (আ.) বলেছেন,

اَلْحَسَدُ مَاحِقُ الحَسَنَاتِ وَالزَّهْوُ جَالِبُ الْمَقْتِ وَ الْعُجْبُ صَارِفٌ عَنْ طَلَبِ الْعِلْمِ ، دَاعٍ إِلَی الْغَمْطِ وَ الْجَهْلِ وَ الْبُخْلُ أَذَمُّ الْأَخْلَاقِ وَ الطَّمَعُ سَجِِیَّةٌ سَیِّئَةٌ .

হিংসা সকল পূণ্য ধ্বংসকারী , দম্ভ ঘৃণা উদ্রেককারী, উজব( عُجْبٌ : নিজের কাজ কর্মকে বড় মনে করে তাতে সন্তোষ ও আত্মতৃপ্তি প্রকাশ) জ্ঞানার্জনের পথে বাধা ও অন্তরায় এবং তা অবজ্ঞা ( তুচ্ছ – তাচ্ছিল্য ) প্রদর্শনে উদ্বুদ্ধ করে ও অজ্ঞতা অবলম্বনে দিকে আহবান কারী , কার্পণ্য সবচেয়ে নিন্দনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং লোভ  হচ্ছে মন্দ ও নিকৃষ্ট স্বভাব (খাসলত )।

বিহারুল আনওয়ার,  খ: ৬৯, পৃ: ১৯৯

 

(৩২) ইমাম হাদী (আ.) বলেছেন,

مَنِ اتَّقَی اللٌٰهَ یُتَّقَیٰ ، وَ مَنْ أَطَاعَ اللّٰهَ  یُطَاعُ ، وَ مَنْ أَطَاعَ الْخَالِقَ لَمْ یُبَالِ سَخَطَ الْمَخْلُوْقِیْنَ ، وَ مَنْ أَسْخَطَ الْخَالِقَ فَلْیَیْقَنْ أَنْ یَحَلَّ بِِهٖ سَخَطُ الْمَخْلُوْقِیْنَ .

যে ব্যক্তি মহান আল্লাহকে ভয় করে তাকে ভয় ও সমীহ করা হয় (তাকে সবাই ভয় ও সমীহ করে);  যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর আনুগত্য করে তার আনুগত্য করা হয় (সবাই তার আনুগত্য করে);  যে ব্যক্তি স্রষ্টার আনুগত্য করে সে সৃষ্টি কুলের (মানুষের) অসন্তোষ ও অসন্তুষ্টির পরোয়া করে না;  যে ব্যক্তি স্রষ্টাকে ক্রুদ্ধ (ও অসন্তুষ্ট) করে তার নিশ্চিত থাকা উচিত যে সৃষ্টি কুলের রোষ ও অসন্তোষ তার প্রতি নিবদ্ধ হবে এবং তার ওপরই বর্তাবে।

(বিহারুল আনওয়ার, খ: ৬৮, পৃ: ১৮২)

 

 

(৩৩) মহানবী (সা.) বলেন,

لا يَسْتَكمِلُ العبدُ الإيمانَ حتّى يكونَ فيه ثلاثُ خِصال: الإنْفاقُ في الاقْتارِ، و الإنْصافُ مِن نفسِهِ، و بَذْلُ السَّلامِ.

নিজের মাঝে তিন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও গুণ পূর্ণ বিকশিত না হওয়া পর্যন্ত বান্দা তার নিজের ঈমান পূর্ণ করতে পারবে না। আর এ তিন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে:

১.দারিদ্র ও অর্থকষ্টে থাকা সত্ত্বেও দান,

২.সাম্য ও ন্যায় পরায়নতা (ইনসাফ) অবলম্বন,

৩.সবাইকে সালাম দেয়া ।

কানযুল উম্মাল, হাদীস নং ১০৭

 

(৩৪) মহানবী (সা.),

«عُنوانُ صَحیفَةِ المُؤمِنِ، حُبُّ عَلیِّ بنِ ابی‌طالب علیه‌السلام.

(কিয়ামত দিবসে) প্রত্যেক মুমিনের আমল নামার শিরোনাম হবে হযরত আলী ইবনে আবী তালিবের (আ.) মহব্বত (ভালোবাসা) ও বন্ধুত্ব।

দ্র: কানযুল উম্মাল, খ: ১১, পৃ: ৬১৫

 

(৩৫) ইমাম সাদেক(আ.):

مَن أنصَفَ الناسَ مِن نفسِهِ رُضِيَ بهِ حَكَما لغَيرِهِ.

যে ব্যক্তি নিজের থেকে জনগণের সাথে ইনসাফ (ন্যায়) ভিত্তিক আচরণ করে বিচারক ও ফয়সালাকারী হিসেবে তার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়ে থাকে (অর্থাৎ তাঁকে বিচারক ও ফয়সালাকারী হিসেবে সবাই গ্রহণ এবং তার ব্যাপারে সবাই নিজেদের সন্তোষ প্রকাশ করে)।

আল-কাফী, খ: ২, পৃ: ১৪৬, হাদীস নং ১২

 

(৩৬) ইমাম কাযিম (আ.):

مَن حَسُنَ بِرُّهُ بإخْوانِهِ و أهلِهِ مُدَّ في عُمرِهِ.

নিজের (দ্বীনী) ভাইদের সাথে এবং নিজের পরিবারের সাথে যে ব্যক্তির আচরণ সুন্দর হয়  তার আয়ুস্কাল দীর্ঘায়িত হয়।

দ্র: তুহাফুল উকূল, পৃ : ৩৮৮

 

(৩৭) ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন,

إذا اتَّهَمَ المؤمنُ أخاهُ انْماثَ الإيمانُ مِن قلبِهِ كما يَنْماثُ المِلحُ في الماءِ .

যখন কোনো মু’মিন নিজ (দ্বীনী) ভাই এর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে তখন লবণ পানিতে যেমনভাবে গলে বিলীন হয়ে যায় ঠিক তেমনি তার (অপবাদ আরোপকারী) ঈমানও তার হৃদয়ে গলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সূত্র: আল-কাফী,খ:২,পৃ:৩৬১

 

(৩৮) ইমাম আলী (আ.) বলেছেন,

لاتُؤيِس مُذنِباً، فَکم مِن عاکفٍ عَلى ذَنبِهِ خُتِمَ لَهُ بِخَيرٍ

কোনো পাপীকে হতাশ ও নিরাশ করো না; কারণ কত যে পাপীর পরিণতি ও সমাপ্তি ভালো হয়েছে (পাপ থেকে বিরত হয়ে তওবা ও অনুশোচনা এবং ভালো নেক কাজ আঞ্জাম দেওয়ার মাধ্যমে)!

বিহারুল আনওয়ার ৭৭/ ২২৯ / ১; মীযানুল হিকমাহ্ , খ: ৯ , পৃ: ৫৭৫

 

(৩৯) ইমাম আলী (আ.) বলেছেন,

الإمام عليّ(ع) : ما عالَ امرُؤٌ اقتَصَدَ.

যে ব্যক্তি (অর্থ ব্যয় ও খরচের ক্ষেত্রে) মধ্যপন্থা অবলম্বন করে ও মিতব্যয়ী হয় সে রিক্তহস্ত ও দরিদ্র হবে না।

আল-খিসাল: ১০/ ৬২০; মীযানুল হিকমাহ্, খ: ৮, পৃ: ২৪৭

 

(৪০) ইমাম হাদী (আ.) বলেছেন,

مَن هانَتْ علَيهِ نَفسُهُ فلا تَأمَنْ شَرَّهُ.

যে ব্যক্তির আত্মমর্যাদাবোধ নেই তার অনিষ্ট ও ক্ষতিসাধন থেকে তুমি নিরাপদ নও ।

তুহাফুল উকূল, পৃ: ৪৮৩

 

হাদিস সংগ্রহ: মিডিয়া মিহির

অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান।

আরো দেখুন…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button