Sliderকুরআনধর্ম ও বিশ্বাস

আল্লাহ কেন কুরআন নাযিল করেছেন?

রাসেল আহমেদ | প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫

আল্লাহ কেন কুরআন নাযিল করেছেন?

পবিত্র কুরআনের ১৪৯ পৃষ্ঠায় (সুরা আন’আম) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআন নাযিলের মূল কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। এই মহাগ্রন্থ মানবজাতির জন্য পথনির্দেশক হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে।

ইমাম আলী (আ.) বলেছেন,
ما جالَسَ هذَاالقُرآنَ اَحَدٌ الّا قامَ عَنهُ بِزِیادَةٍ اَو نُقصانِ؛ زِیادَةٍ فی هُدًی اَو نُفصانِ مِن عَمًی
“যে ব্যক্তি এই মহান কুরআনের সান্নিধ্যে বসেছে, সে অবশ্যই পরিবর্তিত অবস্থায় এর থেকে উঠেছে—হয় তার হিদায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে, নতুবা তার অজ্ঞতা হ্রাস পেয়েছে।” (নাহজুল বালাগাহ, খুতবা: ১৭৬, পৃ. ১৪৯)

কুরআনের বিধান ও নাযিলের উদ্দেশ্য

পবিত্র কুরআনের ১৪৯ পৃষ্ঠায় (সুরা আন’আম) কুরআন এতিমদের অধিকার রক্ষার নির্দেশ দিয়ে শুরু হয়। এখানে আল্লাহ পাঁচটি মৌলিক বিধান দিয়েছেন, যা মক্কার মুশরিকদের কুপ্রথাকে খণ্ডন করে:

প্রথম বিধান: এতিমের সম্পদের সংরক্ষণ

আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দেন, “এতিমের সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না, তবে কল্যাণের উদ্দেশ্যে হলে ভিন্ন কথা।” এটি আমানতদারিতা শেখায়, যাতে এতিম প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার অধিকার ফিরে পায়।

দ্বিতীয় বিধান: ন্যায্য ক্রয়-বিক্রয় ও সঠিক ওজন

ব্যবসায়িক লেনদেনে সততা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আল্লাহ কাউকে সাধ্যের অতীত বোঝা চাপান না, যাতে মানুষ অহেতুক সন্দেহে না পড়ে।

তৃতীয় বিধান: ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা

চতুর্থ বিধান: আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ

পঞ্চম বিধান: সিরাতুল মুস্তাকিম (সরল পথ) অনুসরণ
এরপর আল্লাহ সতর্ক করেন: “সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ো না, কারণ সকল ভ্রান্ত পথ বাতিল এবং তা আল্লাহর পথ থেকে দূরে নিয়ে যায়।”
কুরআন নাযিলের প্রজ্ঞা

আল্লাহ তাআলা কুরআনকে এমন এক গ্রন্থ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যা—

  • হিদায়াতের আলো,
  • মানবজাতির সকল প্রয়োজন পূরণকারী,
  • সুস্থ জীবন-ব্যবস্থার রূপরেখা

তিনি ইহুদি ও নাসারাদের অযৌক্তিক দাবি খণ্ডন করেন, যারা বলত: “আমাদের পূর্ববর্তী কিতাব ছিল, কিন্তু এখন কোনো নতুন কিতাব নেই।” আল্লাহ জবাব দেন: “কুরআন না নাযিল হলে তোমরা বলতে যে, ‘হিদায়াতের জন্য আমাদের কাছে কোনো কিতাবই নেই!”

আল্লাহ বলেন: “যদি কুরআন নাযিল না হত, তাহলে তারা বলত: ‘আমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হতাম, কিন্তু কিতাব না থাকায় আমরা পথভ্রষ্ট হয়েছি।” সুতরাং কুরআন এক হিদায়াতকারী ও শিফাদানকারী গ্রন্থ হিসেবে নাযিল হয়েছে, যাতে মানুষ – বিশেষত মুত্তাকীরা – এর থেকে উপকৃত হয় এবং জীবনের সমস্যার সমাধান পায়। পাশাপাশি, মুশরিকরা তাদের গোমরাহীর জন্য কোনো অজুহাত খুঁজে না পায়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আরও বলেন, “কুরআন নাযিলের পর তোমাদের কোনো অজুহাত থাকল না। কিন্তু তবুও তোমরা হিদায়াত গ্রহণ করনি, বরং বিরোধিতা করেছ এবং নবী (সা.) ও তাঁর সঙ্গীদেরকে শহর থেকে বের করে দিয়েছ। অতএব, তোমরা জালিম – যারা এই আয়াতগুলোকে মিথ্যা বলেছ। এখন শাস্তির জন্য অপেক্ষা কর।”

মিডিয়া মিহির/ধর্ম ও বিশ্বাস

আরো পড়ুন..

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button