আল্লাহর পথে মৃত্যু পরাজয় নয়
ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২৫
মিডিয়া মিহির: যে ব্যাক্তি, আল্লাহর পথে লড়াই করে, তিনি সর্বদা বিজয়ী। তার অবস্থান যাই হোক না কেন—চাই সে বিজয়ী হোক বা শহীদ—সফলতা সবক্ষেত্রেই তার।
ইমাম হুসাইন (আ.) নিজেও তাঁর আন্দোলনকে (উত্থান)-এর ফলাফলকে সদগুণেই গণ্য করেছেন। তিনি বলেছেন:
أَرْجُو أَنْ یَکُونَ خَیْراً ما أَرادَ اللهُ بِنا، قُتِلْنا أَمْ ظَفِرْنا
আমি আশা করি আল্লাহ আমাদের জন্য যা ইচ্ছা করেছেন তা ভালোই হবে, হোক আমরা নিহত হই বা জয়ী হই।
ইমাম খোমেনী (রহ.) আরও স্পষ্টভাবে বলেন:
ملتی که شهادت برای او سعادت است پیروز است
যে জাতি শাহাদাতকে কল্যাণ মনে করে, সেই জাতিই বিজয়ী।
এই শিক্ষা আমাদের শিখায় যে, আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণও কোনো হার নয়। বরং তা হলো চিরন্তন বিজয়ের পথ, আত্মত্যাগের মহিমা এবং ঈমানের শিখর।
হুজ্জাতুল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমীন জাওয়াদ মোহাদেসি বিশেষভাবে লিখেছেন, “আশুরার পাঠ” আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগযোগ্য এবং অনুপ্রেরণামূলক। তিনি বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করে, সে বিজয়ী—চাই তা বিজয় হোক বা পরাজয়। যদিও আমরা লালের দাগে পুড়ে যাচ্ছি, তবুও আমরা সেই কালের গৌরবময়দের মতোই মাথা উঁচু রেখে চলি; কারণ আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করেছি। তাই আমরা বিজয়ী—দিন হোক বিজয়ের, দিন হোক পরাজয়ের।”
এটাই কুরআনিক ধারণা কর্তব্যে নিষ্ঠাবান ব্যক্তি সর্বদা বিজয়ী। সে হয় শত্রুকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করবে, বা নিজেকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করে শহীদ হবে। দু’ক্ষেত্রেই তার বিজয় চিরস্থায়ী।
আশুরার শিক্ষা আমাদের শিখায় যে:
১- আল্লাহর পথে আত্মত্যাগই চিরন্তন বিজয়।
২- সত্যের পথে দাঁড়ানো মানে আত্মত্যাগ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ।
৩- শহীদ হওয়া মানে হার নয়, বরং ঈমানের সর্বোচ্চ সাফল্য।
৪- কর্তব্য পালনের মধ্যেই প্রকৃত সম্মান, গৌরব ও বিজয় নিহিত।
এই শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করা মানে হল, দুনিয়া-জীবনে হোক পরাজয় বা বিজয়—চিরন্তন নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিজয় নিশ্চিত।
اَلسَّلامُ عَلَیْکَ یا اَبا عَبْدِاللّهِ الْحُسَیْن (علیهالسلام)
আমরা—হোক তা মৃত্যুবরণে বা শত্রুকে পরাজিত করে—উভয় ক্ষেত্রেই বিজয়ী।
আশুরার শিক্ষা আমাদের শিখিয়েছে যে, জীবনের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও আনন্দ আসে আত্মত্যাগ ও ঈমানের মধ্য দিয়ে।



