জীবনযাপনতাফসীরধর্ম ও বিশ্বাসবিশেষ সংবাদবিশ্বহাদিস

আমীরুল মুমিনীন (আ.)-এর নির্দেশে আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি শিয়াদের পাঁচটি মূল দায়িত্ব

ডক্টর মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন। প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মিডিয়া মিহির: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল ‍মুসলিমীন নাসের রাফিয়ি নাসের তার এক বক্তৃতায় ‘আমাদের দায়িত্ব আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি’ বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন: আমীরুল মুমিনীন (আ.) আমাদের শিক্ষিত করেছেন, আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি শিয়াদের পাঁচটি মূল দায়িত্ব রয়েছে: তাদের ফজিলত জানা ও অধ্যয়ন করা, খাঁটি ভালোবাসা, তাঁদের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট পৌঁছানো, নির্দেশ মেনে চলা এবং নিষেধকৃত কাজ থেকে বিরত থাকা। এই দায়িত্বগুলো পালন করা মানুষকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে এবং সুখ, কল্যাণ ও আখেরাতের উত্তম অবস্থা নিশ্চিত করে।

আমীরুল মুমিনীন (আ.) আমাদের শিক্ষিত করেছেন যে, আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি শিয়াদের পাঁচটি মূল দায়িত্ব রয়েছে। এগুলো হলো:
১) তাঁদের ফজিলত সম্পর্কে জানা ও অধ্যয়ন করা,
২) নিঃস্বার্থ ও খাঁটি ভালোবাসা,
৩) আল্লাহর নিকট পৌঁছানোর জন্য তাঁদের মাধ্যমে তাওয়াস্সুল করা,
৪) তাঁদের নির্দেশ ও উপদেশ মেনে চলা, এবং
৫) তাঁদের নিষেধকৃত কাজ থেকে বিরত থাকা।

এই দায়িত্বগুলো পালন করা মানুষের সুখ, কল্যাণ এবং আখেরাতের উত্তম অবস্থা নিশ্চিত করে।

প্রথম দায়িত্ব: আহলে বাইত (আ.)-এর পরিচয় ও জ্ঞান

আমাদের উচিত আহলে বাইতের মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা এবং তাদের জীবন ও শিক্ষা অধ্যয়ন করা। বিশেষ করে তরুণদের জন্য, যারা সামাজিক মাধ্যম ও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাদের উচিত সেখানে আহলে বাইট সম্পর্কে সত্য ও প্রমাণসম্বলিত তথ্য খুঁজে জানা।

ইমাম রেজা (আ.)-এর হাদিস ও ফজিলত অধ্যয়ন এবং জীবনী পাঠ করলে, আমরা আসল এবং পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পেতে পারি।

দ্বিতীয় দায়িত্ব: খাঁটি ভালোবাসা

আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা দুই ধরনের হতে পারে: কিছু মানুষের মুখে ভালোবাসা থাকে, কিন্তু হৃদয়ে তা প্রকৃত নয়। তাই আহলে বাইটের প্রতি ভালোবাসা খাঁটি, সৎ ও নিঃস্বার্থ হওয়া আবশ্যক।

তৃতীয় দায়িত্ব: আহলে বাইতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট তাওয়াস্সুল

তাওয়াস্সুলের শিক্ষা কোরআন ও নবীজীর সুন্নাতকে প্রতিফলিত। আমরা যখন প্রার্থনা করি, সরাসরি আল্লাহর কাছে ক্ষমা বা সাহায্য চাইতে পারি। তবে আহলে বাইত আমাদের শেখান, তাঁদের মাধ্যমে প্রার্থনা করলে তা বেশি প্রমাণিত ও আধ্যাত্মিকভাবে মূল্যবান হয়।

যেমন, ইউসুফ ও ইয়াকুব (আ.)-এর কাহিনীতে দেখা যায়, ইউসুফের ভাইরা সরাসরি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়নি, বরং বলেছে:
«یا أبا استغفر لنا»
অর্থাৎ, ইয়াকুব (আ.)-এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি প্রমাণ করে, তাওয়াস্সুল ও বরকতের গুরুত্ব কোরআনে নিহিত।

চতুর্থ দায়িত্ব: আহলে বাইতের নির্দেশ মেনে চলা

শুধু জ্ঞান অর্জন যথেষ্ট নয়। আমাদের তাদের উপদেশ ও নির্দেশগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে।
এতে অন্তর্ভুক্ত: নৈতিকতা, ধার্মিকতা, নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং সদকাম করা।

পঞ্চম দায়িত্ব: আহলে বাইতের নিষেধকৃত কাজ থেকে বিরত থাকা

আহলে বাইত আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, কিছু কাজ করা উচিত এবং কিছু কাজ করা উচিত নয়। আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে:

১. করা উচিত: ধার্মিকতা, ঈমান, নামাজ।

২. করতে হবে না: মিথ্যা বলা, গিবাত, এবং অন্যান্য পাপ।

এই দায়িত্বগুলোর পালন নিশ্চিত করে, আমরা আহলে বাইতের প্রতি আমাদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করছি।

আমীরুল মুমিনীন (আ.) বলেন:
যে এই পাঁচটি দায়িত্ব পালন করবে, সে সুখী ও কল্যাণময় ব্যক্তি হবে।”

আরও পড়ুন 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button