অসংখ্য মুজিযা দেখেও সত্য গ্রহণ করেনি বনি ইসরাঈল!
রাসেল আহমেদ | প্রকাশঃ ১২ জুল ২০২৫

অসংখ্য মুজিযা দেখেও সত্য গ্রহণ করেনি বনি ইসরাঈল!
পবিত্র কুরআনের ১৭১ পৃষ্ঠায় (সুরা আল-আ’রাফ) বনি ইসরাঈলের অবাধ্যতার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে; অথচ আল্লাহ তাদেরকে অগণিত নেয়ামত ও মু‘জিযা দান করেছিলেন।
ইমাম আলী (আ.) বলেছেন:
“اَفضَلُ الذِّکرِ القُرآنُ بِهِ تُشرَحُ الصُّدورِ وَ تَستَنیرُ السَّرائِرُ”
“সর্বোত্তম যিকর হলো কুরআন; এর মাধ্যমে হৃদয় প্রশস্ত হয় ও অন্তর্নিহিত রহস্যগুলো উদ্ভাসিত হয়।” [শারহে গুরারুল হিকম ২/৪৫]
মিডিয়া মিহির-ধর্ম ও বিশ্বাস: পবিত্র কুরআনের ১৭১ পৃষ্ঠায় হযরত মুসা (আ.) ও বনি ইসরাঈলের কাহিনী ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হয়েছে। বনি ইসরাঈল ছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধর। ‘ইসরাঈল’ ছিল হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর আরেক নাম। বনি ইসরাঈল ১২টি শাখায় বিভক্ত ছিল, যার প্রতিটির নেতৃত্বে ছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর একেকজন সন্তান। আত্মীয়তার বন্ধনের কারণে তাদের মধ্যে কখনো বিবাদ বা সংঘর্ষ হতো না। একবার বনি ইসরাঈল বাইতুল মুকাদ্দাসের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে এক উত্তপ্ত মরুভূমিতে আটকে পড়েন। পিপাসায় কাতর হয়ে তারা মুসা (আ.)-এর কাছে পানি চাইলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী আসে— “তোমার লাঠি দিয়ে পাথরে আঘাত কর।” মুসা (আ.) তাই করতেই পাথর থেকে ১২টি ঝরনা প্রবাহিত হয়; প্রতিটি গোত্রের জন্য একটি করে ঝরনা।
আল্লাহ বলেন: “আমি তাদের উপর ছায়ার জন্য মেঘমালা প্রেরণ করেছিলাম এবং মান্না-সালওয়া প্রেরণ করেছিলাম। তাদেরকে বলেছিলাম: আমার দেয়া পবিত্র রিয্ক থেকে আহার কর। কিন্তু তারা কুফরী ও নাফরমানি করল।” [সূরা বাকারা: ৫৭]
আল্লাহ পরবর্তীতে আরো নেয়ামত ও তাদের অকৃতজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তারা ছিল নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী। আল্লাহ তাদের পাপের শাস্তিস্বরূপ মহামারী প্রেরণ করেন।
শনিবারের মাছ শিকারের ঘটনা:
বনি ইসরাঈলের অবাধ্যতার যেন শেষ নেই! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাদের শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু অল্প কিছু মু’মিন ছাড়া বাকিরা এই নির্দেশ অমান্য করে। এটিও ছিল তাদের জন্য একটি পরীক্ষা, যাতে তারা ব্যর্থ হয়। বনি ইসরাঈলের এই দীর্ঘ ইতিহাস আমাদের জন্য বিরাট শিক্ষণীয়। তারা অসংখ্য নেয়ামত ও মু‘জিযা প্রত্যক্ষ করেও ঈমান আনেনি; কারণ তাদের হৃদয়ে মোহর মেরে দেয়া হয়েছিল। আল্লাহ বলেন: “তাদের চোখ থাকতেও তারা দেখে না, কান থাকতেও শোনে না।” [সূরা বাকারা: ১৭১]
শিক্ষা: এই ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পারি যে, আল্লাহর নেয়ামতের কদর না করা এবং নবীদের আদেশ অমান্য করার পরিণতি ভয়াবহ। আর শুধু মু’মিনরাই আল্লাহর রহমত লাভ করে।